বৃহস্পতিবার, ২১ জুলাই, ২০১৬

ফুটবল ও ভিখারি মেয়ে




পরীক্ষা শেষ, ভার্সিটিও বন্ধ দিছে।
সারাদিন বাসায় ঘুমাইয়া আর টিভি দেখে
দিন পার করতেছিল শুভ্র।
বিকালে মাঠে যাইতেই অয়ন ভাই শুভ্রকে
ডাক দেয়।
,
>অই শুভ্র!(অয়ন)
>হুম। বলো।(শুভ্র)
>খেলবি??
>কি?
>ফুটবল
>আমিত ক্রিকেট ছাড়া আর কিছু পারিনা।
>সেটা আমিও জানি। তবুও একজন ডিফেন্ডার
শট আছে।তুই চাইলে ওর জায়গায় খেলতে
পারিস।
>ছোট ছোট পাস ই দিতে পারিনা, আর বিগ শট
মারমু?কখনো হাত পা ভেঙ্গে বাসায় গেলে
আম্মু বলছে রাস্তায় থালা একটা দিয়া
বসাইয়া দিব।
>আরেহ কিচ্ছু হবেনা। একদিনইত।
,
মনটা কেন জানি সায় দিচ্ছিল।তাই খেলতে
রাজি হয়ে গেল।খেলা সুন্দর ভাবে চলছে।
শুভ্রর সামনে বল আসলেই বুকের ভিতরটা
চিরিক দিয়া উঠে।সবাই বা পায়ে শট মারে
আর শুভ্র ডান পায়ে। তাও পারফেক্ট নাহ।
ডানে মারলে বায়ে, আর বায়ে মারলে
সোজা যায় ওর বল।তার উপর হটাৎ একবার বিগ
শট মারতেই মাঠের বাহিরে এক মেয়ের
মাথায় যেয়ে লাগে ফুটবলটা। মেয়ে চশ্মা
পড়া ছিল চশ্মা খুলে মাটিতে পড়ে যায়।
কাধে ব্যাগ আর হাতে একটা প্লেট ছিল
কাচের। সেটা মাটিতে পড়েনি পুরোপুরি
ভাবে।তাই ভাঙ্গেনি।
মেয়েটির সেন্সলেস অবস্থা। মুরব্বি কয়েকজন
এগিয়ে এসে মাথায় পানি দিতে বলল।আর
ফুটবল খেলারে নিয়া যাচ্ছে তাই বলতে
লাগল।একসময় যে বল মারছে তারে বাধার
কথা উঠতেই শুভ্র চৌদ্দপুরুষের নাম
উলটাপালটা মুখে নিয়াই দৌড়। বাসায় যেয়ে
রেফ্রিজারেটর থেকে পানি বের করে
খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ল।কপাল থেকে ঘাম
ঝরছে।মনে মনে ভাবছিল নিশ্চয় পাগলা
কুকুরে কামড়াইছিল তাই আজ ফুটবল খেলতে
গেছে আর আজকেই দুর্ঘটনা ঘটল।অয়ন ভাইরে
ফোন দিল একটু রেস্ট নিয়া।
,
>হ্যালো ভাইয়া(শুভ্র)
>হুম।কোথায় তুই??
>এইত বাসায়, কেন কিছু হইছে?
>এত্ত জোরে শট মারতে গেছিলি কেন?
মেয়ের মাথা ফাটছে মাটিতে পড়ে।
>বাহ আমি কি করলাম?আমিত গোল খাওয়া
থেকে বাচাঁইলাম আর এখন আমারি দোষ?
>ডান পায়ে না মেরে বা পায়ে মারতে
পারলিনা?
>মারছি যে এইটাই বেশি।
>হারামি
>মেয়েটা কি ফকির ছিল ভাইয়া??
>কি কস এইসব??তোদের বাসাতে নতুন আসছে
দেখোসনাই আগে??
>আমিত ভার্সিটি ছাড়া রুমের থেকে বের
হইনা।আর ছাদেও অনেকদিন হইছে যাইনা।
তাছাড়া মেয়ের হাতে প্লেট ছিলত তাই
বললাম।
>কাচের প্লেট নিয়া কেও ভিক্ষা করে??আর
পোশাক দেখলেওত বুঝা যায়। তোর মত গাধা
খুব কমই আছে।মেয়েটার বাবা যেন কি কিনে
দিয়েছিল সেটার সাথে কাচের প্লেট ফ্রি
ছিল। কোচিং থেকে আসছিল মেয়েটা।
বাসায় আর ফিরার আগেই হসপিটালে
পাঠাইয়া দিছোস তুই
>আমিত ইচ্ছা করে করিনাই।
>জানি বাদ দে।আমি ম্যানেজ করবো।তুই
টেনশন নিসনা।
>আচ্ছা।বাই।
>বাই।
,
অতঃপর অয়ন ভাইয়ের কথায় শুভ্র স্ট্রেস ফ্রি
হইল।ভয় শুধু শুভ্রর বাপেরে নিয়া।উনি জানতে
পারলে শুভ্রর সাথে ফ্যানের বিয়ে করিয়ে
দিব।অবশ্য তা আর হয়নি।দুইদিন পর হটাৎ শুভ্র
বাসা থেকে বের হবার সময় দেখলো দরজার
সামনে একটা চশ্মা পড়া মেয়ে তার মধ্য
বয়সী একটা লোককে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
মেয়ের মাথায় ব্যান্ডেজ করা দেখে শুভ্রর
বুঝতে বাকি রইলোনা ইনিই সেই অভাগীনি।
যাকে শুভ্র প্রথমবারের মত মাথা ফাটাইতে
সাহায্য করছে।শুভ্র ভাবলো যে তার বাবার
কাছে মনে হয় বিচার দিতে আসছে।
,
>আসসালামু আলাইকুম আংকেল।(শুভ্র)
>ওলাইকুম আসসালাম।তোমার বাবা কি
বাসায় আছে?(লোকটা একটু গম্বীর স্বরে)
>হ্যা।কিন্তু কেন?
>সাইড দেও।আর উনাকে ডাক দেও।বলো যে
একজন উনার সাথে দেখা করতে এসেছে।
>আচ্ছা।ভিতরে আসুন।
,
শুভ্রর হাত পা কাপাঁ শুরু করছে বিদ্যুৎ
চমকানোর গতিঁতে।
পরে জানা গেল উনার বড় মেয়ের বিয়ে তাই
দাওয়াত দিতে আসছে।শুভ্র প্রায় বেচেঁই
গেছিল।কিন্তু ওর বাবা শেষ পর্যন্ত ওরে
এগেইন টেনশন দিল।মেয়েটাকে সাথে দেখে
শুভ্রর বাবা লোকটাকে জিজ্ঞেস করলো,
,
>এই মেয়েটা কে?(শুভ্রর বাবা)
>আমার ছোট মেয়ে সুপ্তি।ইন্টার সেকেন্ড
ইয়ার।আংকেলকে সালাম করো মামুনি।
(মেয়েটাকে বলল)
.
মেয়েটা শুভ্রর বাবার পা ছুয়েঁ সালাম করে।
.
>তা তোমার মাথা এরকম হলো কিভাবে?
>আর বলবেন না ভাইজান। বখাটে ছেলেরা
সারাদিন ফুটবল খেলে,আর বল মেরে
একেকজনের এই হাল করে।
>আমার ছেলে ওদের থেকে শতগুনে ভাল।
অনার্স থার্ড ইয়ার।অথচ কখনো ফুটবল
খেলেনি।বাসা থেকেই খুব কম বের হয়।শুভ্র
খোজঁ নিয়ে দেখতো কে এই কাজ করছে।
তারপর আমি দেখছি।
>ধন্যবাদ ভাইজান।আমি আসি এখন।আরো
অনেককেই জানাতে হবে।
>আচ্ছা,কোনরকমের সাহায্য সহযোগিতা
লাগলে বলবেন।আমি না থাকলে আমার
ছেলেরে বলবেন।
>আচ্ছা,আসি।
.
শুভ্র ওর বাপের কাছে ওর নামে প্রশংসা
শুনে অবাক।কারন যখন জানবো কাজটা উনার
গুনোধর ছেলেরি তখন শুভ্ররে ছাদ থেকে
ফেলে দিবে সিউর।
খুব রাগী ওর বাবা।
রাতে ছাদে যেয়ে কানে হেডফোন লাগিয়ে
গান শুনছিল। এমন সময় দেখলো সুপ্তি ফোনে
কথা বলতে বলতে ছাদে আসছে।বান্ধবীদের
সাথে সাজেশন নিয়া কথা বলতেছে। শুভ্র
মাঝে মাঝে আড়চোখে তাকায়
মাথার ব্যান্ডিজের দিকে চোখ পড়তেই
পলকেই চোখ অন্যদিকে ঘুরে যায়।বারবার
ভাবছিল মেয়েটাকে স্যরি বলবে।বাট ভয়ে
আর বলেনি।মেয়েদের আবার বিশ্বাস করেনা
শুভ্র বেশি একটা।ওর বাবার কাছে যেয়ে
বললে খবর আছে ওর।
তারপরে মেয়ের সাথে দেখা হয় মেয়ের
বোনের বিয়েতে। এইবার শুভ্র দেখলো যে
মেয়ে মাথা ব্যাথার কারণে বেশি কাজ
করতে পারছেনা।এইবার শুভ্র বুঝলো যে
আসলেই অন্যায় করে ফেলছে সে।
পরেরদিন রাতে মেয়েটার সাথে শুভ্রর ছাদে
দেখা হয়।
,
>কেমন আছেন?(শুভ্র)
>এইত ভাল।আপনি??(সুপ্তি)
>ভালোই।আপনার মাথার অবস্থা কি??
>আসলে ওইদিন হটাৎ করে বল লাগছিল আর
পিছনে পড়ে গিয়েছিলামত তাই আঘাতটা
বেশিই পাইছি।আজ সকাল থেকে ব্যাথা
নেই।
>আচ্ছা যে মারছে তাকে যদি এখন আপনার
সামনে এনে দেই তাহলে কি করবেন?
>এইটা কততম ফ্লোর?
>৭তলা।
>কম হইয়া গেছে। তবুও চলবে।এইখান দিয়ে
ফেলে দিবোনা।রশি দিয়ে মাথা নিচু করে
পা বেধে ঝুলিয়ে রাখব।
>যদি স্যরি বলে?(অনেকটা ভয় পেয়ে যায়)
>কোন রক্ষা নেই।বদমাইশটার জন্যে আমি
আমার বোনের বিয়েতে ঠিকমত কাজ করতে
পারিনাই।
>আচ্ছা বিয়েতে সবাইকে দেখলাম।আপনার
আম্মুকে যে দেখলামনা।
>আমার আম্মু নেই।দুইবছর আগে মারা গেছে
ক্যান্সারে।
>স্যরি।
>আর কিছু বলবেন?
>আসলে একটা কথা বলতাম।
>বলেন।
,
শুভ্র কিছুক্ষন আড়চোখে চারপাশ দেখলো।
তারপর ছাদের গেটের সামনে আসলো।
,
>কিছু মনে করবেন নাতো??
>নাহ, বলেন।আর আপনি এত ভয় পাচ্ছেন কেন??
ভার্সিটির ছেলেরা ভীতু হয় তা জানতাম।
কিন্তু এত হয় জানতাম নাহ।মনে হচ্ছে
ফুটবলটা আপনিই মারছিলেন।
>আসলে আমিই মারছি।
,
শুভ্র কথা বলেই তিন চার সিড়িঁ গ্যাপ রেখে
উড়াধুরা লাফ দিয়া নেমে যায়।মেয়েটা কি
রিপ্লে দিবে তার জন্যও অপেক্ষা করেনা।
রুমে যেয়ে দরজা লাগিয়ে একটা লম্বা ঘুম
দেয়।শুভ্র ভেবেছিল মেয়েটা তার বাবার
কাছে বিচার দিবে।কিন্তু দেয়নি।পরেরদিন
মেয়েটার সাথে শুভ্রর হটাৎ রাস্তায় দেখা
হয়।মেয়েটা তার বান্ধবীদের সাথে কথা
বলছিল বাসার নিচে।শুভ্র বাসায় যেতে
পারছিলনা শরমে। সুপ্তি অবশেষে ডাক দেয়
ওরে।
,
>আর কতক্ষন দাঁড়িয়ে থাকবেন?বললেইত হয়
যে সাইড দেন ভিতরে যাবো।
>না মানে আসলে কিছুনা।আমি এমনিতেই
হাটছিলাম।
>বুঝছি।যাইতে চাইলে যেতে পারেন।
>কোথায় যাবো?
>আমার বাসায় যাবেন?জামাই আদর করবে
আমার আব্বু। যাবেন??(মুচকি হাসি দিয়ে)
>না থাক।লাগবেনা জামাই আদর।(ভয় পেয়ে
যায়)
,
শুভ্র চুপচাপ মাথা নিচু করে উপরে চলে যায়।
ধীরে ধীরে মেয়েটাকে শুভ্রর ভাল লেগে
যায়।চশ্মা পড়া, লম্বা চুল, দেখতেও সুন্দর।
ব্যবহারও যথেষ্ট ভাল।শুভ্র প্রায়ই ছাদে
যেয়ে বসে থাকতো সুপ্তিকে দেখার জন্যে।
কখনো হাই,হ্যালো বলার সাহস করতোনা।শুধু
কানে হেডফোন লাগিয়ে আড়চোখে
মেয়েটার দিকে মাঝে মাঝে তাকিয়ে
রইতো।মেয়েটাও বুঝতো কিন্তু কখনো বুঝতে
দিতোনা।প্রায় একমাস চলে গেছে।কেও
কারো সাথে কথা বলেনা।শুভ্র আজ হটাৎ
মেয়েটাকে হাই বলল।
,
>সূর্য আজ কোনদিকে উঠেছে স্যার?(সুপ্তি)
>সর্বদা যেইদিকে উঠে।
>ওহ ভাল।কেমন আছেন?
>ভাল।আপনি?
>ভালই।
>আপনি কি আজ রাতে বিজি থাকবেন?
>হ্যা,পরীক্ষা সামনে।কিন্তু কেন?
>আজ আমার জন্মদিন। বাসায় একটা ছোট্ট
আয়োজন করছিলাম।যদি আসতেন।
>আচ্ছা দেখি আমি।
>ধন্যবাদ।
>আপনের বাবা যদি মাথা ফাটানোর বিষয়টা
তুলে?তখন কি হবে?
>আমি যাই। বাই
,
শুভ্র ভয়ে আবার দৌড়ঁ দেয়।
রাতে শুভ্রর বাসায় মিউজিক প্লে হচ্ছে।
শুভ্রর কিছু বন্ধুবান্ধব আর বড় ভাইয়েরা
আসছে।শুভ্র এখন শুধু সুপ্তির আসার ওয়েট
করছে।অনেকে অনেক কিছু গিফট করেছে।
কিন্তু সবই অপূর্ন লাগছে।হটাৎ কালো শাড়ী
পড়া একটা মেয়েকে দেখে শুভ্র পুরোই
অবাক।ওর বন্ধুরাও ক্রাশ। চোখে কাজল,হাতে
কালো সাদা কাচের চুরি, কপালে ছোট্ট টিপ
একটা।হাতে একটা ছোট প্যাকেটে মোড়ানো
কি যেন নিয়ে এসে শুভ্রকে দিল।
,
>আমি চলে গেলে এইটা ওপেন করবেন।ঠিক
আছে?(সুপ্তি)
>আচ্ছা।
,
শুভ্র তাড়াতাড়ি কেক কেটে বন্ধুবান্ধবদের
খাওয়া দাওয়া করিয়ে নিজের রুমে যেয়ে
দরজা লাগিয়ে সুপ্তির দেওয়া উপহারটা
দেখতে লাগলো।
একটা ছোট্ট তাজমহল।যেটার নিচে ব্লু
সাইনপেন দিয়ে লিখা তোমার আমার
স্বপ্নের রংমহল।আর গিফটের মোড়কে নামের
জায়গায় লিখা ছিল ছাদে এসো।শুভ্র দৌড়ঁ
দিয়ে ছাদে গেল।
যেয়ে দেখলো সুপ্তি আকাশের দিকে
তাকিয়ে আছে আনমনে।
,
>আপনি এখানে?(শুভ্র)
>আপনার জন্যেই।
>কেন?
>এমনি।আকাশের তারাগুলো অনেক বেশি
তাইনা?
>হ্যা।
>মাঝে মাঝে গুনতে খুব ইচ্ছে হয়।কিন্তু গুনতে
যেয়ে চাদঁটাকে হারিয়ে ফেলব বলে আর গুনা
হয়না।
>হুহহ
>আপনি এত ভীতু কেন?
>কোথায়??
>এইযে শার্ট ঘামে শেষ।হাটু কাপঁছে।
,
আসলে শুভ্র অধিক এক্সাইটেড থাকায়
ঘামাচ্ছিল ঠিকই।কিন্তু তখন হাটু কাপছিঁল
না।সুপ্তির কথা শুনে হাটু কাপাঁ শুরু করে
দেয়।
,
>এমনিতেই।(শুভ্র)
>ওহহহ আপনি মনে হয় অনেকদিন ধরেই কিছু
বলতে চাচ্ছেন আমায়??
>হ্যা।তা অবশ্য ঠিক।(শুভ্র ঘামতে ঘামতে
শেষ)
>কি বলেন।
>আচ্ছা ফোনে টাইপ করে দিলে প্রবলেম
হবে?
>না
,
শুভ্র পকেট থেকে ফোন বের করে টাইপ
করতে লাগলো।মাথা হ্যাং কি লিখবে আর
কি করে ভালবাসার কথা বলবে।সকালে
একটা মেসেজ লিখছিল ওর জন্য সেইটা
খুজঁতে লাগল,
মেসেজটা ছিল,"হুম,তোমাকে বলবোনা আমায়
ভালোবাস।শুধু বলবো তোমাকে ভালবাসার
সুযোগটা দিও।তোমার সাথে রোজ সকালে
ধুয়ো উঠা গরম চায়ে চুমুক দেওয়ার সুযোগটা
দিও।রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে যেন
তোমার মিষ্টি হাসিটা দেখতে পাই এই
সুযোগটা দিও।তোমাকে অফুরন্ত ভালবাসার
সুযোগটা দিও।তোমাকে রোজ সকালে যেন
বলতে পারি বাবু তোমাকে এত্তগুলা
ভালবাসি।এই সুযোগটা দিও।কি দিবে কি
আমায়?
,
>এইটা বলতে চাইছিলেন??(সুপ্তি)
>জ্বি।
>কালবলবো এখন আপনি দৌড়ঁ দিবেন সেটা
আমি জানি।
>না দিবোনা বলেন।
>বলছিনা কাল দিব?নাকি আপনের আব্বুর
কাছে বিচার দিব?
>আমি গেলাম।শুভ রাত্রী।
,
শুভ্র আবার দৌড়ঁ দেয়।আজ রাতে তার চোখে
ঘুম নাই।অপরদিকে দৌড়াঁনোর সময় সুপ্তির
চোখে মুচকি হাসি দেখতে পাচ্ছিল।
পরেরদিন রাতে শুভ্র ছাদে যাওয়ার সময়
দেখলো সুপ্তির বান্ধবীরা ছাদ থেকে
নামছে আর বলছে যে ছেলেটারে এইরকম
সাজা দেওয়াই উচিৎ।যেখানে সেখানে
খেলবে আরর মেয়েদের মাথা ফাটাবে।শুভ্র
কথাগুলো শুনে পুরো অবাক।ছাদে যেয়ে
দেখল সুপ্তি বেঞ্চে বসে আছে।
,
>কেমন আছেন?(শুভ্র)
>অসম্ভব ভাল।আপনি?
>এইত বেচেঁ আছি।(চোখ ভিজা)
>কি হইছে?
>কিছুনা।আমার গতকালের প্রশ্নের
রিপ্লেটা?
>হুম।রাজি।
>কি রাজি?(শুভ্রর চোখের পানি নিমিষেই
ভ্যানিষ)
>আপনার প্রোপজাল একছেপ্ট করলাম।
>এইভাবে হবেনা।প্রোপজ লেটার দেন।
>ফোন দেন।আমিও টাইপ করে দিচ্ছি।
>এই নেন।
,
শুভ্র ফোনটা সুপ্তির কাছে এগিয়ে দিল।
সুপ্তি লিখল"আমি প্রোপজ লেটার কখনো
লিখিনি,আর সবার মত সুন্দর করে বলতেও
পারিনা বাট এতটুকু বলতে পারি,,,,,,
আমি তোমাকে ভালবাসি,হুম মন থেকে
ভালবাসি।সবার মত করে নয়, নিজের মত করে
ভালবাসি।
,
শুভ্র কি করবে বুঝতে পারছেনা।মানুষ কষ্টে
আত্বহত্যা করে।শুভ্র সুখে ছাদ থেকে লাফ
দিতে গেল।
,
>এই কি করছেন?(সুপ্তি)
>আত্বহত্যা
>কেন?(আশ্চর্য হয়ে গেল)
>খুশিতে
>আপনার কিছু হলে আমার কি হবে?
>তাইতো।আচ্ছা করছিনা আত্বহত্যা। কথা
দিন জনম জনম পাশে থাকবেন।(চিৎকার
দিয়ে।)
>কথা দিলাম।
,
শুভ্র সুপ্তির কাছে আসলো।দুজন দুজনের
কপাল একসাথে মিশালো।দুজন দুজনের চোখে
অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।
,
,,
,
,
,
লেখকঃশুভ্র শিশির

রবিবার, ১৭ জুলাই, ২০১৬

বউ




--বউ ও বউ
-- কে তোর বউ?
-- কে আবার তুই
-- মাথা খারাপ আমি তোর বউ হতে যাবো কেন রে?
-- তো কার হবি... তাহসানের? যা দেখ যদি সিরিয়ালে তোর চান্স হয়! অনেকেই তো খাড়ায় আছে
-- মনে কর না লাইনের প্রথমটাই আমি
(ওরে সাবা কি হারামি রে (মনে মনে))
-- ও তো যা! আমাকে ডাকছিস ক্যান?
-- তোকে তো গার্ড হিসাবে আনছি! এই পার্কে তো আর একা একা আসা যায়না
-- দেখ আখি এবার কিন্তু আমাকে অপমান করছিস!
-- হাহাহাহা
-- একদম হাসবি না হাসলে তোকে একদম রাক্ষসী রানি কটকটির মত দেখায় ( যদিও মেয়েটি অনেক সুন্দর করেই হাসে)
-- কি বললি তুই... (ডুম)
-- ইসস... এই তুই মারলি কেন?
-- আরেকটা কি দিবো
-- না থাক! যা দিয়ে ছিস এতেই হবে! বাবারে তোর কি শক্তি রে! আরেকটু হলেই ওপরেই চলে যেতাম
-- কি... কি বললি? আরেকটিবার বল
-- কই কিছুনাতো হিহিহি
.
* নিরবতা
.
-- কি জন্য ডেকেছিস এই অবেলাই? বল্লিনাতো?(আমি)
-- এটা অবেলা?
--তা নয়তো কি?এই দুপুর বেলায় পার্কে তো পিপীলিকারাও আসেনা! আর আমি জান্ত একটা পুরুষ মানুষ
-- ও আচ্ছা তাহলে.. এটা দুপুর তাইনা! তো বিকাল কোনটা শুনি?
-- ওত কিছু জানিনা! কি জন্য ডেকেছিস সেটা বল! .
-- এমনিতেই!
--ইসসস! ইচ্ছে করছে না
-- কি
-- গুলি করে যদি মাথাটা উড়িয়ে দিতে পারতাম! স্বাধের ঘুমটা নষ্ট করে আসলাম
-- থাক সেটা আর এখন তুই পারবিনা!
.
-- এই রাজ শোননা?
--কি?
-- যা না আমার জন্য আইসক্রীম নিয়ে আই না
...কি হলো যা
-- টাকা দে
-- আমি কেন টাকা দিবো? তোর টাকা নেই নাকি
-- আছে! কিন্তু আমার টাকা দিয়ে তোকে কেন আইসক্রীম খাওয়াবো
--ওই কেন খাওয়াবিনারে
-- তুইতো আমার কেউই হসনা, যদি বউ হতিস তো খাওয়াতাম! মুখে তুলেই খাইয়ে ও দিতাম! তা তো আর হবিনা
--উহুহ সখ কত বাছাধোনের! যা নিয়ে আই
.
ধুর সালা কেন যে, এই জোখনি মেয়েটাকে ভালবাসতে গেছিলাম! যবে থেকে ভালবাসছি তবে থেকে মনের থেকেও বেশি আঘাত পাইছে আমার মানিব্যাগটটা
একবছর দশমাস দশ দিন ধরে ওর প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছি আর ও আমাকে পাত্তাই দিচ্ছে না!কি মেয়ে রে বাবা? অন্য কোন মেয়ে হলে,,তো ,, মেয়ে কেন মেয়ের মা-খালা,ফুফু সব প্রেমে পরে যেত!
.
--এই শোনে যা..
--উফফ... কি হলো আবার?
-- এই ধর (১০০টাকার নোট)
--না থাক লাগবেনা
-- কেন লাগবেনা?
-- এমনিতে..
-- নিয়ে যা আর একটা আইসক্রীম আনবি
-- একটা কেন?
-- শুধু আমার জন্য
-- আর আমি?
-- সেটা তুই জানিস
ওমোর খোদা,,,, আল্লাহ আমারে ওপরে তুইলা নেওনা ক্যা
--দাড়িয়ে আছিস কেন যা
--যাচ্ছি
.
ওর পরিচয়টা দেওয়া দরকার! হুম ওর নাম আখি, আমরা একই সাথে ভার্সাটিতে পরি! ভার্সিটিতে যেদিন প্রথম দেখছি সেইদিন থেকেই ওর পিছনে লেগে আছি! খুব ভালবেসে ফেলেছি ওকে!
.
ভার্সিটির সকলেই জানে, মানে! শুধু ও ছাড়া! মেয়েটা কেন যে আমার ভালবাসা এইভাবে এড়িয়ে চলে বুঝিনা! না সব বুঝেও না বোঝার ভান করে তো কে জানে!. কিন্তু ও যে আমাকে ভালবাসে সেটা বুঝতে পারি! তবুও কেন যে এত কষ্ট দেয় আমাকে!
.
এই মামা কর্নেটো আইসক্রীম দেন তো! আখির খুব প্রিয় আইসক্রীমটা! তাই আমারও খুবই প্রিয়!
.
--এই নে তোর আইসক্রীম
-- হুম দে
এ বলেই খেতে শুরু করলো! আমি ওর পাশে বসে ওর খাওয়া দেখছি! আহ হা কি অপরুপ?
বামহাত দিয়ে গাল বেয়ে পড়ে থাকা চুল গুলো সরিয়ে, কানে গুজে দিচ্ছে! এতে ওর সৌন্দর্য টা ফুটে ওঠছে! কেমন জানি বুকের বাম পাশটাই ধুকবুক ধুকবুক করছে! কেন যেন মেয়েটি আমার আশেপাশে থাকলেই বুকের ধুকবুকানিটা বেড়ে যায়! খালি ভালবাসতে মন চায়
.
-- এইভাবে তাঁকিয়ে কি দেখা হচ্ছে শুনি
...কি রে
-- তোকে
--কেন এর আগে কোনদিন দেখিস নাই নাকি
--না দেখছি কিন্তু আজকের মত এত সুন্দর না
কিছু বলছে না শুধু আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে! মুখখানা রাগি রাগি ভাব !তারপর বলল
-- তোর আইসক্রীম কই
-- আমি খাবোনা
-- কেন?
--এমনিতেই
--তাহলে আমার দিকে এইভাবে তাঁকিয়ে থাকবিনা,,, বলা যায় না পেট খারাপ করতে পারে
.
--আখি একটা কথা বলবো
খাওয়া থামিয়ে দিয়ে বলল
-- ভালবাসা, বাসি বাদে কিছু বলার থাকলে বল
কথা শেষ করেই আবার মুখে আইসক্রীম
-- বিলিভ মি আখি আমি তোকে অনেক ভালো বাসি! তুই আমাকে আর এইভাবে ফিরাই দিস না প্লীজ! দেখিস আমি তোকে খুব সুখে রাখবো! খুব ভালবাসবো তোকে!
..কিহলো কিছুতো বল
-- হুম কি যেন বললি?
--মানে তুই কিছু শুনিস নি
--নাতো
-- আবার আমাকে এড়িয়ে যাচ্ছিস
.
-- চল এখন (আখি)
-- যাবোনা
--তো এখানে বসে থাকবি
--হুম! কোন মেয়েকে দেখলেই প্রোপজ করবো
-- কি? তোর তো সাহস কমনা!চল এইখান থেকে
আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে যাচ্ছে! এই মেয়েটাকে আজও বুঝলামনা! বুঝলামনা ওর মন,
কি চাই ও! না দেয় অন্যর সাথে আমাকে পিরিত করতে না ও করে! ধুর বাবা আর ভাললাগে না! এভাবে আর কত দিন! সব কিছুরই একটা লিমিট থাকা দরকার!
.
শুভ ফোন করেছে! আমার খুব কাছের বন্ধু
--হুম দোস্ত বল
-- তুই কই রে?
-- এইতো বাসায়! কেন কি হয়ছে?
-- কি আবার হবে? তোর রানী তোকে খোজে বেরাচ্ছে পুরো ভার্সিটি আর বারবার করে তোর খবর নিতে বলছে! তুই কেমন আছিস? কি হয়ছে তোর?কেন ভার্সিটিতে আসছিস না? ইত্যাদি ইত্যাদি!
--তাই নাকি
--হুম! তুই বলে ওর ফোন ধরছিস না!
-- ওকে দ্বারা দেখাচ্ছি! আর শোন এবার জিঙ্গাসা করলে বলবি -ও ওর নতুন জিএফ কে নিয়ে বিজি আছে! তাই ভার্সিটি আসতে পারছেনা
--ওকে বাই
--বাই
আজ 2দিন হল ভার্সিটি যায়না! এর মধ্যে আমার পরীটার অনেক কল, মেসেজ আসছে! একটারও কোন রেসপন্স করিনি! কেন করবো ও আমার কে? এতদিন ধরে মেয়েটা আগলে রাখছি! আঠার মত লেগে থাকছি! ভালবাসছি তাও আমার প্রতি একটু ভালবাসা জন্মেনা! হুহ
.
সকালে ঘুমিয়ে আছি! বাসায় থাকলে এই একটা কাজই আমি ভাল পারি!.
--এই উঠ
--উউউ
--এই রাজ উঠ
--আর একটু মা প্লীজ
-- ওঠ সালা, আমি তোর মা না
-- তাহলে
লাফ দিয়ে উঠে বসে পরলাম
-- কি রে তুই? তুই এখানে হঠাৎ(চোখ ডলতে ডলতে)
--হুম তুই তো যাবিনা তাই আমি আসছি
-- ওই তোর হাতে আমার লুঙ্গি ক্যা? দে
-- তাড়াতাড়ি উঠ নয়লে দিবোনা
--দিবোনা মানে কি
--উঠবি না চাঁদরটাও নিয়ে নিবো
-- ওমা এটা কোন ধরনের কথা.. লঙ্গি না দিলে উঠবো কেমনে?ওকে আমি এইভাবেই উঠে যাচ্ছি
-- না না দাড়া দাড়া! এই নে তোর লুঙ্গি! ওয়াক কি গন্ধ, ধোতো করিস না নাকি
--না দে তুই!
আমার দিকে ছুরে মারলো লুঙ্গিটা!
..--এই তুই চোখ বন্ধ করবি না এইভাবেই পরবো ? তবে না করলেই আমার কোন আপত্তি নেই! তুইতো আর বাইরের কেউ না
--এই না না
হাহাহাহা
মেয়েটা ঘুরে চোখ বন্ধ করে দাড়ালো
আমিতো হাসতেও পারছিনা লজ্জাও পারছিনা
--হয়েছে
--হুম এবার তুই ঘুরতে পারিস
-- এই যা এখন ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হো,নয়লে তোর খবর আছে
--ওকে বাবা যাচ্ছি, তুই বস আমি এই যাবো আর আসবো
--হুম
.
মেয়েটা হঠাৎ এইভাবে আমার বাড়িতে আসবে , ভাবতে পারছিনা ! আহ হা মেঘ না চাইতেই যেন জ্বল!মনে হয় ঔষধটা কাজ করছে! হিহি আমারতো খুব মজা লাগছে
.
রুমে এসে দেখি,,,, আমার পেয়ারেলাল টা বসে বসে বই পরছে! গোলাপি থ্রি পিচ পরে আছে যা এর আগে খেয়ালই করিনি! কি সুন্দরী না লাগছে আমার পরীটাকে ?
.
ওয়াও ঘরটাও কি সুন্দর করে সাজানো! একদম পয়-পরিষ্কার করা! মনে হচ্ছে এটা আমার রুমই না!
-- কিরে লিস্তি! ঘর এমন অগোছালো করে রাখিস কেন? এমন করলে তো উঠতে-বসতে বউয়ের হাতে ঝাটা পিটা খাবি!
--খেতেই তো চাই! আর সেটা তুই হলে তো কথায় নেই (বিড়বিড় করে)
--এই কি বললি রে
--কই কিছুনাতো(মাথা চুলকিয়ে)! তুই এত সুন্দর করে গোছালি
--হুম খাইলি
--হুম!কিন্তু তুই হঠাৎ আমার বাড়ি
--কেন আসতে পারিনা?
-- না পারিস না কারন এটা আমার বাড়ি
-- তোর বাড়ি হলে এটা আমার শশুর বাড়ি তোর কোন সমস্যা
(এইবলেই জিব্বাহতে কামড় দিলো)
--তুই কি কিছু বললি ( না বোঝার ভান,গভীর ব্যাপরটা )
-- নাতো! চল এখন
--হুম চল!
.
--এই মামা
ও রিক্সা ডাকলো! কিছুটা অবাক হলাম! অবাক না হওয়ার কিছু নেই!
ও কখনো রিক্সা ডাকেনা... আমি সাথে গেলে আমিই ডাকি কিন্তু আজ হঠাৎ
--কি হলো উঠবি না দাঁড়িয়ে থাকবি
ওঠে
ওর পাশে বসলাম,,, তবে আজ কেমন জানি অন্যরকম ফিলিংস হচ্ছে মনের মাঝে! কিছুটা ভয় ভয়ও কাজ করছে
তবে এর মাঝেও খুব ইচ্ছে করছে ওর হাতটা ধরতে,, হাতের ওপর হাত রাখতে! কিন্তু কোথায় জানি গিয়ে আটকে যাচ্ছি
বাতাসে উড়ে এসে ওর গন্ধসিদ্ধ, খোলা চুল গুলো মুখে ছিটকে পরছে! বেশ ভালোলাগা কাজ করছে! ওকে দেখছি, চুলগুলো বার বার সরাচ্ছে! ফর্সা গালের সাদা সাদা লোমগুলো কেমন অপরুপ দেখাচ্ছে! নাকের ওপর জমে আচ্ছে বিন্দু বিন্দু ঘাম! ইচ্ছা করছে হাতের উলটো পিঠ দিয়ে গালটা ছুয়ে দেয়!.কিন্তু সাহসে কুলাচ্ছে না
.
ও তাঁকিয়ে আছে সামনের দিকে! এ পযর্ন্ত একটা কথাও বলেনি হঠাৎ
-- কোন সমস্যা
-- নাতো (ভয়ে ভয়ে)
.
রিক্সা চলছে তার নিজ গতিতে,! আর আমি তাঁকিয়ে, পাশের চলে যাওয়া গাড়ি দেখছি!
--ওই কি দেখোস ওই দিকে
-- কই কিছুনাতো
-- কিছুনা! ওই মেয়ের দিকে তাঁকিয়ে ছিলি কেন
-- কোন মেয়ে ( যাহ বাবা একটা মেয়ের দিকে তাকাতেও পারবোনা?
-- আমি মনে হয় কিছু দেখিনা তাইনা ( রাগে ফসফস করছে)
-- আসলে
-- থাক, আর কিছু বলা লাগবেনা ! মেয়ে দেখলেই তো খালি ছকচুকানি
..মামা এই দিকে চলেন
-- এই দিকে কেন? ভার্সিটি তো এইদিকে
-- চুপ একদম চুম
মনে হচ্ছে মেয়েটা পুরাই রেগে গেছে! হঠাৎ কি হলো ওর?
.
রিক্সা সেই পার্কটাই এসে থামলো! ভাড়াটা দিতে গেলাম! আখি থামিয়ে দিল! ও ভাড়াটা দিয়ে রিক্সা ওয়ালাকে বিদায় করলো!
কি হচ্ছে এসব কিছুই মাথায় আসছে না!
.
ওর মুখোমুখি দাড়িয়ে! তবে মাথা নিচু করে! চোখে চোখ রাখার মত আপাতত কোন সাহস নেই!
রেগে আছে কখন কি করবে বলা যায়না! আসলে এমন রাগতে ওকে কখনো দেখিনি! তাই ভয় হচ্ছে
.
এবার ওর দিকে সাহস নিয়ে তাকালাম! কোমরে দুহাত দিয়ে দাড়িয়ে, রাগী লুক নিয়ে আমার দিকে তাঁকিয়ে !
এটা দেখে মাথা নামিয়ে নিলাম
--ভার্সিটি না গিয়ে এখানে আসলি কেন?(আমি)
--.........
--তুই এই দুদিন ভার্সিটি আসিস নি কেন? তুই জানিস কতটা টেনসন হচ্ছিলো আমার! দুরাত ঠিকমত ঘুমাতে পারিনি! তোকে ফোন দিয়েছি কতবার ফোন পযর্ন্ত ধরিস নাই!কেন? কেন করলি আমার সাথে এমন? খুব মজা পাইছিস তাই না এমন করে আমাকে কষ্ট দিয়ে! জানিস না তোর সাথে কথা না বলে আমি থাকতে পারিনা! বুঝিস না আমি তোকে কতটা ভালবাসি! তোকে ছাড়া কোন কিছু ভাবতে পারিনা, তোকে ছাড়া থাকতে পারিনা! বুঝিস না তুই বুঝিস না ( এক নাগারে এত গুলো কথা বলে গেল, কাদো কাদো গলায়)
কথা গুলো শুনে আমার মাথাটা ঘুরপাক খাচ্ছে ! দুকান যেন বিশ্বাসই করতে চাইছে না, ও কাদছে
-- আসলে আমি বুঝতে পারিনি.... আমার জন্য তুই এতটা কষ্ট পাবি! খারাপ লাগবে
মেয়েটা দৌড়ে এসে আমাকে জাপটে ধরলো! এটার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না
--এই কি হচ্ছে এসব? আমারতো কুতুকুতু লাগে
--ধুর ফাজিল
আমিও এবার খুব শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম! আর নিজে নিজেকে কথা দিলাম যত যায় হোক আর কাদতে দিবোনা তোকে!
--এই তুমি আমাকে এইভাবে সারাজীবন আগলে রাখবে তো!
-- হঠাৎ তুমি করে বলা হচ্ছে
-- হুম তুমিও আমাকে বলবা
-- ওকে পাগলী ওকে
-- পাগলী না পরী! আর তুমি অন্য কাউকে ভালবাসো নাতো
-- না আর ভালবাসলেও তাতে কি
-- কি মানে (আমাকে ধাক্কা দিয়ে) যেই আমার সতিন হবে তাকে সহ তোমাকে কেটে নদীর জ্বলে ভাসিয়ে দিবো
-- হাহাহা ওকে তাই করও
আবার ওকে বুকের কাছে টেনে নিলাম
--পরী
--হুম
-- একটা পাপ্পি দাওনা
-- যাহ দুষ্টু......... ওটা বিয়ের পর
.
.
লিখা -নির্লজ্জ্ব রাজ

মঙ্গলবার, ৫ জুলাই, ২০১৬

১৪২ নম্বর ক্রাশ



সেমিস্টারের বেতন দেয়ার দিনগুলো একটু বিরক্তিকরই হয় সবসময়। এই বিল্ডিং থেকে সেই বিল্ডিং, হল থেকে ডিপার্টমেন্ট, ব্যাংক থেকে প্রশাসনিক ভবন। সারাদিন এইভাবে দৌড়ের উপর থাকতে হয়। এত ঝামেলার মধ্যে নতুন ঝামেলা হলো আসন্ন সেমিস্টারের বেতন দেয়ার তারিখ নোটিশ বোর্ডে চলে এসেছে, আর আমি রেডি হতে গিয়ে দেখি আমার বেতন বইয়ের পৃষ্টা শেষ। নতুন বেতন বই নিতে সকালে উঠেই হাজির হলাম প্রশাসনিক ভবনে। কর্মকর্তার টেবিলের সামনে বেতন বই নেয়ার জন্য দাঁড়িয়ে আছি। আশে পাশে আরো কয়েকজন আছে। ডান দিকে তাকিয়ে আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে গেলো। অসম্ভব সুন্দরী এক মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। কর্মকর্তার সাথে কথা বলছে। কথা শুনে বুঝলাম আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের ফার্স্ট ইয়ারে ভর্তির জন্য এসেছে। আমি মেয়েটার দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতে পারছিলাম না। বারবার ফিরে তাকাচ্ছিলাম। মেয়েটার নাম জানতে একটু চালাকির চেষ্টা করে ডান দিকে সরে গেলাম, আড়চোখে তাকালাম তার বেতন বইয়ের দিকে। ঠিকমত দেখতে পেলাম না।
আমি যে মেয়েটার দিকে বারবার তাকাচ্ছিলাম তা সে খেয়াল করেছে। হঠাৎ সে আমার দিকে ফিরে তাকালো। আমি তো তার দিকেই তাকিয়ে ছিলাম। চোখ সরালাম না। সে চরম বিরক্তি নিয়ে আমার দিক থেকে চোখ সরিয়ে নিলো। কর্মকর্তা আমার দিকে তাকিয়ে বললো—তোমার কি লাগবে?
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে থাকা অবস্থাতেই বললাম—নতুন একটা বেতন বই দেন।
--কোন ডিপার্টমেন্ট?
--BAD…
--একটু অপেক্ষা করো, এই কাজটা সেরে নেই।
ব্যাড বলার সাথে সাথেই মেয়েটা আমার দিকে ঘুরে তাকালো। তার চোখে রাগ ভরা। কর্মকর্তা বুঝতে পেরেছে আমি বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন ডিপার্টমেন্টের (BAD) কথা বলেছি। মেয়েটা বোঝেনি। আমি একটু হেসে দিলাম, শয়তানী হাসি। হঠাৎ পিঠে হাত পড়লো কার যেন। ফিরে দেখি বন্ধু হিরা দাঁড়িয়ে আছে।
হিরা দ্রুত ভঙ্গিতে বললো—কি রে, বেতন বই নেয়া হইছে তোর? ব্যাংকে আগে আগে না গেলে তো সিরিয়াল পাবি না... জলদি কর...
আমি হিরার কথা শুনেও না শোনার ভান করে ওকে পালটা প্রশ্ন করলাম—দোস্ত, do you know what is the most beautiful sentence in the world?
হিরা বললো—আরে ব্যাটা, ইংলিশ কম ঝাড়। বাংলায় বল।
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বললাম—I Love You…
কথাটা শোনার সাথে সাথে মেয়েটা রক্তচক্ষু নিয়ে আমার দিকে তাকালো। তার চোখ বিশ্বাস করতে পারছে না আমি এই কথাগুলো বলেছি। অবাক আর রাগ দুটোই ভেসে উঠলো তার চোখে। আমার মুখে হাসি, ঠোটের কোণের মুচঁকি হাসি।
হিরা বললো—বুঝছি, সকালে তোর নাস্তা হয় নাই। পেট খালি তাই আবোল তাবোল বকতেছিস। চল আমার সাথে। আগে খাবি, তারপর সব কাজ।
আমি মেয়েটার দিকে তাকিয়েই বললাম—না রে দোস্তো, দুনিয়াটা অনেক সুন্দর। দুনিয়ার মানুষগুলো আরো সুন্দর।
অফিসের কর্মকর্তা মনে হয় এবার একটু বিরক্ত হলেন। আমার দিকে তাকিয়ে বললেন—এই, তুমি যাও তো এখান থেকে।
আমি বললাম—আমার বেতন বই দেন, চলে যাচ্ছি।
লোকটা কোন কথা না বলে জলদি একটা বেতন বই বের করে আমাকে দিলো। আমি হাতে নিয়েই তার দিকে ঝুকে গিয়ে লোকটার হাতে থাকা মেয়েটার বেতন বইটা ছিনিয়ে নিলাম। ঘটনার দ্রুততায় সবাই ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো। আমি বেতন বইটা হাতে নিয়ে মেয়েটার নাম আর আইডি জোরে শব্দ করে পড়লাম। সাথে সাথে মেয়েটা আমার হাত থেকে তার বেতন বই ছিনিয়ে নিয়ে গেলো। শোধবাদ। আমি ছিনিয়েছিলাম, সেও ছিনিয়ে নিলো।
মেয়েটা, যার নাম অর্থী রহমান, রাগান্বিত কন্ঠে চেঁচিয়ে বললো—আপনার সাহস তো কম না... কি মনে করেন নিজেকে? ভার্সিটির সিনিয়ার হইছেন বলে কি সব কিনে নিছেন নাকি? মাস্তানি করেন? এই আপনার নাম কি বলেন? দেখাচ্ছি আপনার মাস্তানি। চেনেন আমাকে !! কি হলো, কথা বলেন না কেন?
আমি একটু থতমত খেয়ে গেলাম, বোকার মত মুখ করে চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছি। কি বলবো বুঝতে পারছি না। মেয়েটা যে এমন রিএকশান দেখাবে বুঝতে পারিনি। পিছন থেকে হিরা আস্তে আস্তে বললো—দোস্ত, এখনো সময় আছে, চল কেটে পড়ি।
আমি মেয়েটাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললাম—ইয়ে মানে.........
বলেই হিরাকে সাথে নিয়ে দিলাম দৌড়। এক দৌড়ে ব্যাংকে পৌছে গেলাম। ব্যাংকের সামনে দাঁড়িয়ে হাফাচ্ছি দুজনে। হাফাতে হাফাতেই হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার উপক্রম দুজনের। আমার এই বন্ধুটা আমাকে কখনো ছেড়ে যায়নি। এই শালার সাথে কত ধরনের শয়তানি করি, কত ঝগড়া বাধে, তারপরও আবার ফিরে আসি। এই হারামীরে সাথে নিয়ে একটু আগে যেমন দৌড় দিলাম, এরকম অনেক ধরনের দৌড় আগেও দিছি। এই ব্যাটার পরানটা সারাদিন ভয়তে লাফায়।
যাই হোক, বেতনপর্ব শেষ হয়ে ২-৪ দিন পার হয়ে গেছে। সকালের ক্লাস মিস করে ১২ টার দিকে তপন দাদার চায়ের দোকানে হাজির হলাম। বাইকটা পার্ক করে আয়েশ করে হাত দুটো দুদিকে ছড়িয়ে দোকানের দিকে তাকাতেই দেখি আমার থেকে ১০ ফিট সামনের বেঞ্চে অর্থী বসে আছে। আমাকে দেখে পাশে বসা একটা ছেলেকে যেন কি বললো। ছেলেটা আমার দিকে হাত ইশারা করে ডাকলো। আমি পিছনে তাকিয়ে কাউকে না দেখে আবার সামনে তাকিয়ে ঐ ছেলেটার উদ্দ্যেশ্যে বললাম—আমি?
ছেলেটাও আঙ্গুল দিয়ে আমাকে ইঙ্গিত করলো—হ্যা, হ্যা, তুমিই।
আমি বোকাবোকা বেশ ধারণ করে সামনে এগিয়ে গেলাম। আমি ছেলেটার সামনে দাড়াতেই ছেলেটা আমাকে বললো—এই ছেলে, তুমি অর্থীকে কি বলেছো?
আমি বললাম—ইয়ে মানে, ভাইয়া... হইছে কি...
--হইছে কি মানে? কি হইছে?
--কিছুই হয় নাই ভাই। ক্রাশটা একটু বেশি জোরে খাইছিলাম তো আর কি।
কথাটা শোনার সাথে সাথে অর্থী লাফ দিয়ে উঠে দাড়ালো। ছেলেটাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো—দেখছো ভাইয়া, কত্ত বড় সাহস!! এরপরও কথা বলে...
ছেলেটা অর্থীকে থামিয়ে দিয়ে বললো—তুমি বসো তো, আমি দেখতেছি।
এবার ছেলেটা আমার দিকে ফিরে বললো—হু, কি বলতেছিলি যেন? “জোরালো ক্রাশ” খাইছিস? এইটা তোর কত নম্বর ক্রাশ ছিলো রে?
আমি বললাম—ভাইয়া, আপনি তো সবই জানেন। এইটা আমার ১৪২ নম্বর, এইটাই শেষ ভাইয়া। আর হবে না, প্রমিজ।
অর্থী আমার দিকে তাকিয়ে রাগে ফুসছে। কিছু বলতে পারছে না। ছেলেটা এবার আমাকে বললো—শালা, তুই কি টাইপের মানুষ বল তো? এত এনার্জি কই পাস? নাহ, আমি তোর সাথে পারবো না। তা র্যানগ দিবি ভালো কথা, আগে কইতি, একসাথে যাইতাম। একা একা দিছিস, মেয়েতো রেগে ফায়ার। আমার কাজিন হয় রে। তুই আমার দোস্ত না হইলে তোর আজকে খবর ছিলো রে।
আমি বললাম—ধুর ব্যাটা, তুই র্যা গ দিতে পারিস নাকি? আর তোর কাজিন হয় তো আমার তাতে কি? আমি কাউরে ভয় পাই নাকি? তুই আমারে চিনিস না?
হাসতে হাসতে কথাগুলো বলে ছেলেটার সাথে হ্যান্ডশেক করে কোলাকুলি করলাম। ছেলেটা আর কেউ না, আমার কলেজ জীবনের বন্ধু কৌশিক। আর্কিটেকচারে পড়ে। আমাদের কথা শুনে অনামিকা হা করে তাকিয়ে আছে আমাদের দিকে। রাগ আর অবাক দুটোই তার চোখে। কি বলবে বুঝতে পারছে না। রাগী চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি তার সামনের বেঞ্চে বসলাম। অর্থীর দিকে তাকিয়ে কৌশিককে বললাম—তা তোর কাজিনের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবি না?
কৌশিক আমাকে অর্থীর সাথে পরিচয় করিয়ে দিলে আমি বললাম—কালকের কান্ডে কিছু মনে করো না। তোমাকে ভালো লেগে গেছে। কিচ্ছু করার নাই। মাথা নষ্ট বলতে পারো।
এবার অনামিকা অবাক হয়ে বললো—আপনি কি পাগল নাকি বলেন তো? কালকে ঐ কাজ করেছেন, আজ এইসব বলছেন...
--পাগল বলতে পারো। আমি এরকমই। আর হ্যা, কালকের জন্য কোন স্যরি টরি বলতে পারবো না। তোমাকে আমার ভাললেগেছে মানে যে আমাকেও তোমার ভাল লাগতেই হবে এমন কোন কথা নেই।
কথাগুলো বলে আমি উঠে এলাম সিগারেট ধরাতে। অর্থী আমার দিকে হা করে তাকিয়ে আছে। সে আসলে কি বলবে বুঝতে পারছে না। বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে আছে সে। আমাকে উদ্দ্যেশ্য করে বললো—এই যে, শোনেন...
আমি তার দিকে ফিরে বললাম—শোনার মত সময় এখন নেই। পরে যদি কখনো দেখা হয়, তখন শুনবো।
কথাগুলো বলেই বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে আসলাম।
এরপর থেকে শুরু হয় আমার ফাইজলামি। অর্থী আমার ১৪২ নম্বর ক্রাশ কথাটা ভুল। সিরিয়াস কোন রিলেশনশিপে আমি কখনো যাইনি। অনেককেই ভাল লাগলেও কাউকে অর্থীর মত মনে ধরেনি। তাই একটু বেশীই গায়ে ঘেসার চেষ্টায় থাকলাম। ভার্সিটির ভিতরে ফুল বিক্রি করা এক পিচ্চিকে ঠিক করলাম। প্রতিদিন একটা করে লাল গোলাপ অর্থীকে দিয়ে আসবে। কয়েকদিন নিজে লুকিয়ে গোলাপ দেয়ার ঘটনাটা দেখলাম। গোলাপ দেয়ার পর অর্থী “কে দিয়েছে” জিজ্ঞাস করলে ঐ পিচ্চি আমার নাম যখন বলে তখন অর্থী চারিদিকে ঘুরে তাকিয়ে আমাকে খুঁজতে থাকে। কিন্তু পায় না। আমি হাসি।
বিজনেস আর আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্ট দুটোই একই বিল্ডিঙ্গে। কয়েকদিন পর আমি ক্লাস শেষ করে বিল্ডিঙ্গের মেইন গেট দিয়ে বের হচ্ছি। হঠাৎ অর্থী কোথা থেকে যেন আমার সামনে এসে দাঁড়ায়, কোমরে হাত, রাগান্বিত চেহারা। আমার দিকে তাকিয়ে বললো—ঐ মিস্টার, আপনি কি শুরু করছেন বলেন তো? চান টা কি বলেন তো?
আমি কোন কথা না আস্তে পাশ কাটিয়ে চলে এলাম আমার বাইকের কাছে। বাইক স্টার্ট দিয়েছি তখনই অর্থী এসে আমার বাইকের চাবি খুলে নিয়ে দৌড় দিলো। আমি হতবম্ব হয়ে বাইকে বসে আছি। বাইক থেকে নেমে আমিও অর্থীর পিছনে দৌড়ানো শুরু করলাম। আমাকে আসতে দেখে অর্থী আরো জোরে দৌড় দিলো। আমি দৌড়ে তাকে ধরলাম।
—আরে, চাবি নিয়া তুমি কি করবা? ঐটা আমারে দিয়া যাও।
—আগে বলেন আপনি কি চান, নাহলে এই চাবি পাবেন না।
--চাবো আর কি !! আমার বাইকের পিছনের সিটের পার্মানেন্ট প্যাসেঞ্জার বানাতে চাই তোমাকে।
--ইশ... এত সোজা?
--সোজা না হইলে ব্যাকা তো হবে?
--এইরকম সস্তা ফুল দিয়ে আমার মন জয় করা যাবে না জনাব আগেই বলে দিচ্ছি।
--আমি অতো মন জয় টয় করার মধ্যে নেই। মন চাইলে আসো নাহলে আমি বিদায় নিলাম।

কথাটা বলে আমি অর্থীর হাত থেকে বাইকের চাবি কেড়ে নিয়ে চলে এলাম। বাইক স্টার্ট দিতে যাবো তখন টের পেলাম কে যেন বাইকের পিছনের সিটে উঠে বসলো। পিছনে তাকিয়ে দেখি অর্থী। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি আমি।
অর্থী আমার দিকে তাকিয়ে বললো—এমন হা করে দেখার কিছু নেই। বেশি জোরে বাইক চালাতে হলে আমাকে আগে থেকে ওয়ার্নিং দিয়ে নিতে হবে বলে দিলাম। আর হ্যা, কোনদিন যদি শুনেছি বা দেখেছি এই সিটে অন্য কোন মেয়ে উঠেছে তাহলে কিন্তু সেদিনই খুন করে ফেলবো।
কথাগুলো বলে অর্থী আমার কাধে হাত দিয়ে শক্ত করে ধরে বসলো। আমি মুচকি হাসি দিয়ে বাইক চালাতে গিয়ে জোরে ব্রেক কষলাম। অর্থী আমার পিঠে ধাক্কা খেয়ে বুঝলো আমি ইচ্ছা করে এই কাজ করেছি। ও আমার পিঠে চড় দিলো, তারপর দুইহাত দিয়ে আমার কোমর জড়িয়ে ধরে বসলো।
আমি হাসতে হাসতে বাইকের স্পিড বাড়ালাম।
বাইক সামনের দিকে যাচ্ছে, জীবনেরও নতুন অধ্যায় শুরু হচ্ছে।

লেখাঃ Muttaky Rahman Biswas


সোমবার, ৪ জুলাই, ২০১৬

পাগলী বউ



প্রায় ৩০মিনিট ৩৩সেকেন্ড ধরে আমাদের এলাকার
সবচেয়ে ডেঞ্জারাস মেয়ের ভাই আমাকে
সেই রকমের প্যাঁদানি দিল।শরীরের প্রত্যেকটা
স্ক্রু যাতে ঢিলা হয় তাতে কোন কিপটামি করেননি।
একদম নিজে প্রত্যক্ষভাবে যথাযথভাবে কাজটি
করেছেন।ঘড়ি দেখে সময়টা আবার নিশ্চিত করলাম।
৩০ মিনিট ধরে ধোলাই দিলো সেটা না হয়
মানলাম,কিন্ত এই ৩৩সেকেন্ডেও দিলো!!!শালার
মনুষত্ব নাই বললেই চলে,পুরাই হিটলারের বংশধর।
ঠিকভাবে দাড়াতেই পারছিনা।শালারা স্ক্রুই মনে হয়
গায়েব করে দিছে।নিজেকে দেখে নিজেই
চিনতে পারতেছিনা।আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল
মারই বা কেন খেলাম সেটাও জানি না।শরীরের সব
জায়গায় ট্যাটুর দাগ হয়ে গেছে।ট্যাটু বলতে ওই
যে আদর করার সময় কিছু রক্ত জমাট বাধা কালো
কালো জায়গা সৃস্টি হইছে ওগুলাই আরকি।যাইহোক
মার খাওয়ার কারন আর স্ক্রুহীন শরীর নিয়ে
খোড়াতে খোড়াতে একটা মেডিসিন এর
দোকানে আসলাম।কারন এই অবস্থায় যদি মা আমাকে
দেখেন তাহলে হয়ত উনি নিজেই হাসপাতালে
যাবেন না হয় আমাকে পাঠাবেন।তাই একটু ব্যান্ডেজ
করে বাসার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলাম।
মার খাওয়ার কোন কারন খুজে পাচ্ছিনা।হঠাৎকরেই
নীলিমার ভাই বা আমাকে কেন মারলেন।ওহ নীলিমা
হল ওই বজ্জাতের বোন।ভাই যেমন বজ্জাত
বোনটাও তেমন ডেঞ্জারাস।কারন ওই মেয়ে
কখন কি করে তা কারো মাথায় ঢুকে না।এলাকার
ছেলে-মেয়ে থেকে শুরু করে
প্রত্যেকেরই ধারনা এই মেয়ের একটু হলেও
মাথায় সমস্যা আছে।যেমন পরশুদিনকার ঘটনা,,,,,,
আমি বাজার করে ব্যাগ হাতে বারি যাচ্ছি এমন সময়
কোথাথেকে যেন নীলিমা আমার সামনে এসে
দাঁড়িয়ে গেল।আমি হকচকিয়ে অবাক হয়ে ওর দিকে
তাকালাম।দেখি আমাকে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত
কয়েকবার দেখল।তারপর কয়েকবার আমার চারপাশে
ঘুরে ঘুরে কি যেন পর্যবেক্ষন করল।আমি
জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,
:আপনি কি কিছু বলবেন?(গুরুগম্ভিরভাবে বললাম)
দেখি ও আমার দিকে দুই পা এগিয়ে এল।আমি কিছুই
বুঝতেছিনা।কিছু বুঝার আগেই আমার হাত থেকে
হ্যাচকা টান মেরে ব্যাগটা ওর হাতে নিল তারপর
মনোযোগ দিয়ে কি কি আছে দেখল।আমি আবার
জিজ্ঞাসা করলাম,,,
:আপনি কি কিছু খুজছেন?(আমি ওর এই কর্মকান্ড
দেখে অবাক হওয়ার শেষ পর্যায়ে)
দেখি এবার ও দুই পা পিছিয়ে গিয়ে ব্যাগটা আমার
দিকে এগিয়ে দিয়ে চোখের ইশারায় ব্যাগটা ধরতে
বলল।আমি ব্যাগটা ধরেই কিছু বলতে যাব ওমনি ও
বলে উঠল,,,,,
:মাংস কম খাবেন।(নীলিমা)
আমিতো পুরাই অবাক।কোন আগা-মাথা নাই হঠাৎ
করেই কথাটা বলে ফেলল।আমি কিছু না বুঝতে
পেরে আবার বললাম,,,,
:জি!!!!!!!!!!(আমি)
ও আমার কথার কোন উত্তর না দিয়ে নিজের মত
করে বলছে যেন আমি কোন পুতুল আর আমার
কোন জ্ঞান বিবেক নেই,আমি শুধু শ্রোতা আর
ওর কথা আমাকে বাধ্যতামূলকভাবে শুনতেই হবে।
আর এবারও আমাকে বলার কোন সুযোগ না দিয়েই
ও বলল,,,,,
:শাক-সবজি বেশি করে খাবেন(কথাগুলো এমন
ভাবে বলছে মনে হচ্ছে সে নিজে ডাক্তার আর
আমি ক্যান্সার এর লাস্ট স্টেজ এর রোগী আর
আমি তার পা ধরেছি যেন আমি ১মিনিট বেশি বাচি)।
(নীলিমা)
কথাটা বলেই ও উলটাদিকে হাটা শুরু করল।আমি কিছু
বলতে যেয়েও কেন যেন কিছু বলতে পারলাম
না।বাসায় যেয়ে ব্যাগ তন্নতন্ন করে খুজছি।মাংস কি
মাংসের এক টুকরো পর্যন্ত পাইনাই।যদিও মাংস আমার
খুব পছন্দ কিন্তু সেদিন মাংস নেইনি কারন বাসায় মাংস
ছিল আর মা শুধু শাক-সবজি আনতে বলেছিল।
যাইহোক সেদিন মেয়েটির ওই রহস্যজনক
কর্মকান্ড গুলোর ব্যাখ্যা আমি পাইনি আর সত্যি
বলতে সেভাবে ভাবাও হয়নি কারন আমি একরকম
ধরেই নিয়েছিলাম যে মেয়েটা পাগল মানে পাগলি।
সেইদিন যাকে পাগল মানে পাগলি ভেবেছিলাম তার
ভাই আজ আমাকেই মেরে আধাপাগল বানিয়ে
ফেলেছে।কারন এই অবস্থায় যে কেউ আমাকে
দেখলে পাগলই ভাববে।আর যদি ভাবেও তাতেও
আমার আফসোস নাই কারন পাগল বললেও
অন্ততপক্ষে শিক্ষিত পাগল বলবে।শিক্ষিত পাগল
কথাটা মাথায় আসতেই নিজের উপর কেন জানি
গর্ববোধ হতে লাগল যার বহিঃপ্রকাশ হল একটুকরো
মলিন হাসি।
ভাবতে ভাবতে কখন যে বারির সামনে চলে আসছি
খেয়ালই নেই।দরজায় যেয়ে কলিংবেল চিপার
কিছুক্ষণ পরেই মা দরজা খুলে দিল।ভিতরে ঢুকতে
না ঢুকেতেই মা বলল,,,,
:কিরে তোর আবার কি হল?(আমাকে এভাবে
দেখে মানে স্ক্রু বিহীন দেখে যে মারও মাথার
স্ক্রু প্রায় ঢিলা হয়ে আসছে তা আমি বুঝে গেলাম)
(মা)
:আরে ওসব কিছু না।ওই একটু সমস্যা হইছে
তো,মানে সমস্যায় পরছিলাম তো,মানে একটু
এক্সিডেন্ট হইছিল তো তাই।(আমি খালি তোতলাচ্ছি
কারন মিথ্যা বলায় আমার মত অপারদর্শী খুজে পাওয়া
ঢের)
আর কিছু না বলে রুমে চলে গেলাম।একটু ফ্রেশ
হয়ে শুয়ে পরলাম।কারন ক্লান্তি তো লাগছিলই আর
সাথে সাথে ব্যাথাটাও একটু একটু করে বাড়ছিল।আমি
কোনভাবেই আমার আদর পাওয়ার সেই করুন
দৃশ্যের কোন কারন খুজে পাচ্ছিলাম না।ভাবতে
ভাবতেই সেদিনের কথাটা মনে পরে গেল,,,,
সেদিন আমার কিছু দরকারি কাগজের দরকার ছিল তাই
ভার্সিটি তে গেলাম সেগুলো আনতে।
কাগজগুলো তুলতে একটু সময় লেগে গেল।
যেই ভার্সিটি থেকে বের হব অমন সময় ভার্সিটি
লাইফের স্মৃতি বিজরিত একটা স্থানের কথা মনে
আসল।মায়ার টানে চলে গেলাম সেখানে।তেমন
একটা পরিবর্তন আসে নি।তখন যেমন ফাকাফাকা ছিল
এখনো এমনি আছে।রোদের তাপে সেই
পরিচিত গাছের ছায়ায় বসলাম ততক্ষনে আমি পুরো
ঘেমে গেছি।হঠাৎ করেই পিছনে কোন
মেয়েলি কণ্ঠস্বর এর আভাস পেয়ে পিছনে
তাকালাম,দেখি নীলিমা আমায় ডাকছে,,,,,
:এই নেন।(মেয়েটি মানে নীলিমা আমার দিকে
একটা সেভেন আপ এগিয়ে দিল)
:না না,থাক আমার লাগবে না।ধন্যবাদ(যদিও অনেক ইচ্ছা
ছিল নেওয়ার তবুও ভদ্রতা বলে একটা কথা আছে)।
(আমি)
:নিন।মানুষ মানুষের জন্যই।আপনাকে এত ফরমালিটি
দেখাতে হবেনা আমি সব বুঝি।আর এটা আপনাকে
ফ্রি দিচ্ছিনা শুধে আসলে শোধ করিয়ে নেব
(অনেকটা হাসিমাখা মুখেই নীলিমা বলল)।
:হা হা হা,সে তো বটেই।(আমি)
নীলিমার হাত থেকে বোতলটা নিয়ে এক
ঢোকে শেষ করে ফেললাম।আসলে অনেক
তৃষ্ণা পেয়েছিল।যাইহোক বোতলটা ওকে
দিতেই ও চলে গেল।অবশ্য আবার ডেকে
ধন্যবাদটা দিয়েছিলাম।
সেভেন আপ খেয়ে একটু স্বস্তি লাগছিল।প্রায়
কিছুক্ষণ বসে থাকার পর যখনি উঠে যাব তখনি আবার
মেয়েলি ডাক।কিন্ত এবার একটা না প্রায় পাচটা
একসাথে।পিছনে ঘুরে তাকালাম।মেয়েগুল
ো ঠেলেঠুলে নীলিমাকে আমার দিকে এগিয়ে
দিল।আমি ততক্ষনে বুঝে গেছি শুধ নিতে আসছে
পরে পুরো ঘটনা শুনে বুঝলাম শুধ আর আসল তো
নিবেই সাথে আরও কিছু বোনাসও নিবে।কারন
নীলিমাকে সামনে ঠেলে দিতেই ও সব উগলে
দিল,,,,
:আসলে ভাইয়া আমরা সবাই ফুচকা খাইছি বাট বিলটা একটু
বেশিই আসছে।তাই আসলে আপনি যদি আসলে
মানে,,,(একদম নিচের দিকে তাকিয়ে লজ্জাভরা মুখ
নিয়ে বলছে।দেখে বেশ মায়াই লাগল আর তার
সাথে তোতলাচ্ছে বেশ বলতে অনেক সুন্দর
লাগছে)
আমি ওকে মানে নীলিমাকে থামতে বললাম,,,,,
:হুম,বুঝছি সমস্যা কি।চল আমার সাথে, দোকান টা
দেখিয়ে দাও।(আমি)
দেখলাম সবার মাঝে হাসির একটা রোল পরে
গেল।কিন্তু নীলিমা হাসছেনা।ও আমার সাথে একটু
এগিয়ে আমাকে দোকানটা দেখিয়ে দিল।আমি
ভিতরে যেয়ে বিল কত তা জিজ্ঞাসা করলাম।উত্তর
শুনে তো আমি পুরাই থ মেরে গেলাম।দুই
হাজারের উপরে বিল আসছে।এটাও বুঝলাম যে
মেয়েগুলার খাওয়ার পরিমান ও আইটেম কি আর
কেমন ছিল আর এও ভালভাবেই বুঝলাম যে আমাকে
বোকা বানানো হয়েছে।যাই হোক বিল দিয়ে
দিলাম।পালটা প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য একটা
সেভেন আপ নিয়ে সেই মেয়েগুলোর
কাছেই গেলাম।ওদের মাঝে নীলিমার দিকে
সেভেন আপের বোতলটা এগিয়ে দিয়ে
বললাম,,,,
:তোমার শুধ আর বোনাসটা দিয়ে এলাম।এবার
আসলটা নাও।(আমি)
আমার কথা শুনে নীলিমার মুখটা কালো হয়ে গেল।
ওর হাতের কাছে বোতলটা রেখেই কোন কথার
অপেক্ষা না করে চলে গেলাম।আসলে কিছুই
বলতে চাইনি কিন্তু ব্যক্তিত্ব তে আঘাত লাগায়
বলতে হল।
আজ টের পাচ্ছি হয়ত সেদিন নীলিমাকে অপমান
করার জন্যই আজ ওর ভাই এমন করল। নিজেকে খুব
দোষী মনে হচ্ছে।যদিও ও আমাকে অপমান
করেছিল কিন্তু আমার ওকে অপমান করা মোটেও
ঠিক হয়নি।
ওসব কথা ভাবতে ভেবতেই মার আওয়াজ পেলাম,মা
আমাকে ডাকছে,,,
:আবির,খেতে আয় বাবা।এমনি আজ তোর মুখের
দিকে তাকানো যাচ্ছেনা তারউপর এক্সিডেন্ট
করেছিস।আয় বাবা জলদি আয়।
ওহ হ্যা আমি আবির।নিজের পরিচয়টা দিতেই ভুলে
গেছি।আসলে আজকে আমার যা খাতিরদারি হইছে
পারলে নিজের চৌদ্দগুস্টির নাম ভুলে যাই।যাই হোক
একটা ভাল সফটওয়্যার কম্পানি তে জব করি।একজন
ভাল প্রোগ্রামার ও কোডার হিসেবে সুপরিচিত তাই
মানিব্যাগটাও একটু আধটু ফুলে থাকে।নিজের বারি গাড়ি
মানে চারচাকা না থাকলেও দুই চাকা আছে সাথে একটা
ছোট ফ্লাটও আছে।আমি মাকে নিয়ে এখানে
থাকি।আর একটা বড় বোন আছে যিনি সবসময়
একজনকে ঝারির উপর রাখেন মানে আপু বিবাহিত তাই
আর আমাদের সাথে তেমন একটা থাকে না।
মার কথায় গিয়ে খেয়ে আসলাম।তারপর সবরকমের
চিন্তা বাদ দিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম।রাত পেরিয়ে সকাল
যে কখন হল বুঝতেই পারি নি আসলে একটা
ঘোরের মাঝে ছিলাম।কারন শরীরটা খুব ক্লান্ত ছিল
তাই মাও আর ডাকাডাকি করেননি।ঘড়িতে সময়
দেখতে দেখতে সূর্য মামাকে হাই দিয়ে ঘুম
থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে অফিস এর জন্য রেডি
হয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিলাম।আজ হালকা দেরি
হয়ে গেল তাই বাইক টা বের করলাম তাহলে রিকশা
আর বাস এর অপেক্ষায় সময় নষ্ট হবেনা।
বাইকটা বেশ আস্তেই চালাচ্ছি। যেই মোড় টা ক্রস
করে মেইন রোডে উঠব ওমনি দেখি নীলিমা
(বজ্জাতের বোন মিস ডেঞ্জারাস)মোড়ে
রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে।ওকে দেখে আমি
একটা নয় দুইটা গিয়ার মেরে পিকাপটা বাড়িয়ে দিয়ে
বাইকের গতি বারালাম।আর এখানেই ঘটল বিপত্তি।ও
হঠাৎ করেই আমার বাইকের সামনে চলে আসল।
আমি কিছু বুঝার আগেই দেখি আমার হাতের পাচ
+পায়ের পাচটা আঙুল আমার বাইকের তথাকথিত ব্রেক
জিনিসটিকে খুব শক্ত করেই চেপে ধরল আর
অমনি আমি বাইকসহ পুরাই ফিল্মি স্টাইলে স্লিপ খেয়ে
উস্টা খেতে খেতে নিউটন এর ৩য় সূত্রের মত
রাস্তার বীপরিতমুখী রিএকশন উপভোগ করতে
করতে অবশেষে থামলাম।মাথাটা তুলতেই মনে হয়
আমার অর্ধেক জান বের হয়ে গেল।পুরো
শরীর ব্যথা করছে,প্রিয় শার্টটা ছিড়ে একাকার।রক্ত
পরে চারপাশটা কেমন যেন হয়ে গেছে।দেখি
নীলিমা আমাকে তুলতে তুলতে সরি বলছে।তখন
কেন জানি আমার মাথায় কিছুই খেলছিল না।চোখে
আবছা আবছা দেখছিলাম।পৃথিবীটা অন্ধকার লাগছিল।
দৃষ্টি ক্ষিণ হয়ে আসল। আমার আর কিছুই মনে
নেই।
ঘুম ভাংতেই দেখি হাসপাতালের সেই সাদা
বেডগুলোতে লাশের মত শুয়ে আছি।বুঝে
উঠতে সময় লাগল কিন্তু বুঝলাম এখনো বাঁচে আছি।
হাসিমাখা মুখখানা নিয়ে যেই পাশে তাকালাম সেই আবার
টাস্কি খেলাম।কারন একটাই নীলিমা আমার দিকে
তাকিয়ে আছে।তাকিয়ে আছে মানে ঘুমোচ্ছে
কিন্তু মুখটা আমার দিকে।চোখের নিচে কাল দাগ
পরে গেছে।দেখে মনে হচ্ছে খুব চিন্তিত,
খুব ক্লান্ত।এই প্রথম ওকে এতটা কাছে থেকে
দেখলাম।ব্যথাগুলো পালিয়ে যেতে লাগল।মনে
হতে লাগল কেউ আমার সব কষ্টগুলোকে ধূলিসাৎ
করে দিচ্ছে।অনিচ্ছাস্বত্তেও তাকিয়ে আছি তো
আছিই।একটা মেয়ে কে যে এতটা ভাল লাগতে
পারে তা কিছুক্ষণ আগেও অসম্ভব মনে হত আর
এখন সেই ভাললাগা বেরেই চলছে।মাঝে মাঝে
ইচ্ছে হচ্ছে যেন ওর চুলগুলো কানে গুজে
দেই।ইচ্ছেটাকে প্রশ্রয় দিব এইসময়েই নীলিমা
আবির মানে আমার নাম ধরে চিৎকার করেই আমার
হাতটা ধরে কাঁদতে লাগল।আমি তখনো ওর মুখের
দিকে তাকিয়ে আছি,আমার মনের গভীরতা মাপছি।
কতটুকু ডুবে আছি জানিনা কিন্তু হাতটাকে শক্ত করে
ধরলাম।নীলিমা আমার দিকে তাকাল।ওর
চোখগুলোর কথা বুঝতে আমার কষ্ট হলনা।মনের
ব্যবধান টা যে খুব বেশি নেই তা বুঝতে পারলাম।ও
আরও শক্ত করে হাতটা ধরল।নিজের ছায়াকে যেন
আবার নতুন করে পেলাম,তাই হারিয়ে যাওয়ার ভয় হলনা
কিন্তু হাতটা ধরেই থাকলাম।
ভাবতে ভাবতেই চোখে পানি চলে আসল।
ফোনটা বেজেই যাচ্ছে। দেখি নীলিমার ফোন।
বুঝলাম ভয় পাচ্ছে।আসলে একা থাকতে প্রচন্ড ভয়
পায়তো।মনের অজান্তেই চোখে জল চলে
আসল পুরনো দিন গুলোর কথা ভেবে। আসলে
সেদিন নীলিমাকে দেখেই বুঝেছিলাম মেয়েটা
আমায় কত ভালবাসে।আর হাসপাতাল থেকে বাসায়
ফেরার পথে ও আমায় সব খুলে বলে। আমার প্রতি
ওর লুকিয়ে লুকিয়ে খেয়াল রাখা।বাসায় এসে মাকে
শাক-সবজি আনতে বলা।সব ছিল ভালবাসা আর সাথে
পাগলামিও ছিল কিন্তু যা ছিল আমার জন্যই ছিল।আমায় খুব
ভালবাসত আর ওর বান্ধবিদের সেটা জানা ছিল কারন
ওদের দিয়েই আমার গোয়েন্দাগিরি করত ও।তাই
সেদিন ভার্সিটিতে আমাকে দেখতেই ওর বান্ধবিরা
আমার কাছ থেকে খাওয়ার বায়না ধরে।ও মানতে না
চাইলেও ওকে দিয়েই বলায় আর আমি ভেবেছিলাম
ও আমাকে বোকা বানিয়েছিল তাই উলটা ওকেই
অপমান করলাম।মেয়েটা সেদিন সারাদিন-সারারাত
কেঁদেছিল।পরে ওর ভাই ভার্সিটি এর কোন একটা
ছেলের কাছ থেকে খবর পায় যে আমি ওকে
অপমান করছি।আর সেজন্যেই আমার সেই হাল
করেছিল।অবশ্য পরে নীলিমা ওর ভাইকে সব
বুঝিয়ে বলে যার ফলে তিনি নিজের ভুল বুঝতে
পারে।আর সেজন্যই নীলিমা সেদিন আমাকে স্যরি
বলার জন্য আসে।আসলে খুব এক্সাইটেড ছিল তাই
বাইকের সামনে চলে আসে।আর আমি ওইজন্যই
এক্সিডেন্ট টা করি ।আর তারপরের ঘটনা তো
আপনারা জানেনই।কি????!!!! জানেন না ।তাহলে
আরেকাটু কষ্ট করে পড়ুন।
সেদিন হাসপাতাল থেকে আসার পথে নীলিমার
কথাগুলো শোনার পর বাসায় এসে ওর কথাগুলো
ভাবতে লাগলাম।পরে বিকেলের দিকে নীলিমার
ভাই আমাদের বাসায় এসে আমাকে দেখলেন।
আন্তরিক ভাবে দুঃখ প্রকাশ করলেন।আসলে তিনি
খুব লজ্জিত ছিলেন।আর নীলিমা হয়ত উনাকে
বলেছিল যে ও আমাকে ভালবাসে।আর আমি
যথেষ্ট ভাল ছেলে হওয়ায় বিয়ের প্রস্তাব টা
দিয়েই দিলেন।অবশেষে সবার সম্মতিতে
আমাদের বিয়েটা হয়।আর আজ সেই বিয়ের
তৃতীয় বছর পূরণ হলো আর আমার মনেই নাই।
কাজের চাপে একদম ভুলেই গেছি।আর এজন্যেই
মহারাণী আমায় ঘরে ঢুকতে দেননি।তাই ছাদে
আসলাম।আর হঠাৎ করেই পুরনো দিনগুলোর কথা
মনে পরে গেল।আমার সেই নীলিমাটা একটুও
পাল্টায় নি।এখনো পাগলিই রয়ে গেছে।তার ভাই
আগের মত এখন বজ্জাত না হলেও ও মানে
নীলিমা এখনো ডেঞ্জারাসই আছে।তাইতো
এখানে মশার কামড় খাচ্ছি আর আপনাদের আমাদের
প্রেমের অদ্ভুত কাহিনিটা শুনাচ্ছি।নাহ আর থাকা যাবেনা
আমার পাগলিটা ফোন দিয়েই যাচ্ছে খুব ভয় পাচ্ছে
মনে হয়।যাই নাহলে পরে আবার বাসায় ঢুকার এই
চান্সটাও মিস করবো।আগে আমার বোন অন্যরে
নাচাইত আর এখন আমার পাগলি বউটা আমাকে নাচায়।
আমার অবশ্য ভালই লাগে ওর পাগলামি গুলা।আর আপনারা
কিন্তু ওকে বলবেননা যে আমি ওকে পাগলি বলছি
খুব অভিমান করবে।আমার পাগলিটা খুব অভীমানি আর
এই অভীমানি পাগলিটাকে আমি খুব খুব খুব ভালবাসি।
Written by:স্পর্শের বাইরে অসীম আমি

ভালবাসার বউ




-আফসোস রে পাগলি আপসোস।
-কিসের এত আপসোস তোর জি এ ভাগছে নাকি।
-কিসের মধ্যে কি ঢুকাইলি বজ্জাত।
-কেন মানুষ তো কিছু হারালেই আফসোস করে
ভুল কি বললাম।
-ওরে পাগলী তুই কি জানিস আমার মনের কথা।
-জানি তো ঈদ এসে গেল সবার জিএফ আছে শুধু
তোর নেই।
-মজা নিচ্ছিস নে নে আমারও একদিন হবে দেখিস।
-হবে মানে বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু শুভ্র।
-কোথায় বেশি হল দেখা।
-কি দেখাবে হু আমি থাকতে তোর আবার জিএফ
লাগবে তুই আসলেই একটা ইয়ে।
-কি করব বল তুই তো আমার বউ জি এফ তো আর
না।
-জি এফ লাগবে না দাড়া মজা দেখাচ্ছি তোকে।
-কি করবি তুই হুম?
-আমার বাসার নিচে যে মুটকি আপু আছে ওরে
তোর নাম্বার দিয়ে বলব প্রেম করতে চাস তুই।
-আমার লক্ষী বউ মৌটুসি এমন করেনা।
-কেন তোর জি এফ লাগবেনা।
-না আমার কিছু লাগবেনা তোকে ছাড়া।
-ঈদটা তো মাটি হয়ে যাবে তোর বল।
-কেন তুই তো আছিস।
-ধুর আমি কি আর তোর সাথে থাকব নাকি আমার তো
বিএফ আছে ওকে সময় দিতে হবে।
-কি বললি তুই?
-হি হি হি
-হাসবিনা একদম দাঁত ভেঙে দিব তোর।
-আমি তোর নাক ভেঙে দিব।
-তোর যে নরম হাত মারলে ব্যাথার চেয়ে আরামই
বেশি পাব।
-এত খুশি হইও না চাদু আমি শক্তও হতে পারি।
-তাই বুঝি যাই হোস না কেন প্রেমিকার হাতে
শহীদ হলেও লাভ আছে।
-শখ কত।
-বলছি শোন না।
-কি?
-ঈদে কিন্তু তোকে কিছু দিতে পারব না।
-জানি তো তুই একটা ফইন্নি।
-আরে দিব কিছু তো দিব।
-কি দিবি?
-রঙিন চুড়ি দুহাতে পরবি।
-ধুর এখন কেউ হাত ভরে চুড়ি পরে দু টো একটা
ব্যাচেই যথেষ্ট।
-বলিস কি তুই এত মডার্ন হলি কবে থেকে।
-তোর সাথে প্রেম করে হি হি হি।
-তাহলে নিবি না আমার চুড়ি?
-না রে ওটা তুই সখিনা জরিনা এদের দিস হি হি হি।
-এভাবে ইনসাল্ট করতে পারলি আমায়।
-ওলে বাবালে বাবুটা রাগ করছে রে আচ্ছা দিস।
-লাগবে না দিব না।
-আমি তো মজা করছিলাম চুড়ি আমার অনেক পছন্দ
তুই জানিস না।
-আচ্ছা উঠি রে এখন।
-কোথায় যাবি মাত্র তো আসলি।
-বাসায় কাজ আছে।
-বিয়ে করেছিস নাকি নতুন বউয়ের টানে ঘরে
ফিরছিস তাড়াতাড়ি।
-করলেই বা কি।
-না আমার সতীনটাকে তো দেখতে হবে কই
দেখা।
-ধুর আমি গেলাম।
-এই শুভ্র শোন শোন...
আর পিছনে ফিরিনি।মেয়েটা দিন দিন ফাজিলের ডিব্বা
হচ্ছে।
.
মৌটুসী আমার জি এফ। সুধু জি এফ না আরও বেশি কিছু
বউ বলে ডাকি।নাহ শারীরিক সম্পর্ক হয় নি আসলে
আদর করেই বউ ডাকি।ডাকবই বা না কেন আমার বন্ধুরা
যদি ওকে ভাবী ডাকে আমি কেন তবে বউ ডাকব
না।অবশ্য মৌ এতে খুশিই হয়।মৌ ভীষন চঞ্চল একটা
মেয়ে।ওর সাথে প্রেম করতে কত কি যে
করতে হয়েছে আল্লাহ আর আমিই জানি।প্রথমে
তো পাত্তাই দিত না।ওর কোন খালাত বোন নাকি
প্রেম করে পালিয়ে গিয়ে ধোকা খেয়ে ফিরে
এসেছে সেই থেকে ভয় প্রেমের কথা
শুনলেই লাফ দেয়।কিন্তু অসম্ভবকে সম্ভব করার
মত অনন্ত জলিলও আছে আমার বন্ধুর তালিকায়
ওদের শত খাটুনি দিন রাত মৌ এর পিছনে ঘুর ঘুর করে
অতঃপর আসলাম ওর ওয়েটিং লিষ্টে।এর আগে যারা
ওকে প্রপোজ করেছিল তারা তো জ্বলছে
কতজন থ্রেট ও করেছে।প্রেম তো কোন
কিছুর জন্য থেমে থাকেনা।অতঃপর একমাস পরে
মহারানী রাজি হল।তবুও শর্ত অন্যকোন মেয়ের
দিকে তাকানো যাবেনা,দিনরাত ফোনে কথা বলতে
পারবে না,ন্যাকামো করে বাবুও ডাকতে
পারবেনা,ওর অনুমতি ছাড়া ওর সাথে যোগাযোগ করা
যাবেনা আরও কত কি হাবিজাবি।আমি তো কিছুই শুনিনি
কারন তখন খুশিতে আত্মহারা।যাকে জীবনের
সবটুকু দিয়ে চাওয়া হয় তাকে পেয়ে গেলে
কেউ আর অন্যকিছুতে মন বসাতে পারেনা।আমারও
ঠিক তেমন।তো তখন যতই কঠোর নিয়ম দিক না
কেন এখন আমার থেকে ওর টানই বেশি।সারাদিন
ফোন করে।খোঁজ খবর নেয়।বোঝা যায় বালিকা
এবার সব ছাড়িয়া প্রেমের সাগরে ডুব দিয়েছে।যাই
হোক রমজানের ছুটি পড়ে গেছে তাই আর
ক্যাম্পাসে যাওয়া হয় না।মৌ ফোন করে বলল এখানে
আসতে তাই এসেছিলাম কিন্তু ফাজিলটার হাসি আর কথা
শুনলে গা জ্বলে যায়।আমার নাকি ঘরে বউ আছে
তার টানে চলে আসছি সহ্য করা যায় এটা।থাক ওখানেই
বসে থাক তুই।
.
পরেরদিন...
মৌ ফোন করেছে...
-হ্যালো শুভ্র।
-হুম বল মৌ।
-আজকে আসবি না?
-কোথায়?
-কাল যেখানে বসে ছিলাম।
-আসলে তো সেই আবার শুরু করবি।
-না রে আজকে শুধু রোমান্টিক মুডে থাকব।
-দরকার নেই রোমান্টিকের আমার বাসায় কাজ
আছে।
-কি এত কাজ তোর শুনি প্রেম করার আগে তো
খুব বলতিস মৌ আমি তোর জন্য জান দিয়ে দিব।
-তাই বলে সুবিধা অসুবিধা দেখতে হবে না।
-অত কিছু জানিনা তুই আসবি।
-আচ্ছা চেষ্টা করছি।
-চেষ্টা করবি মানে কি আমি কিন্তু অপেক্ষা করব
তোর জন্য।
-আরে বোঝার চেষ্টা কর আম্মু বলছিল বিল জমা
দিতে।
-বাহ ভাল বিল জমা দাও তুমি।
-হুম।
-হুম মানে আগে দেখা করবি তারপর বিল বুঝেছিস।
-আচ্ছা রাখ।
-হুম বাই।
মেয়েটা আমাকে জ্বালিয়ে মারবে।একেতো
আম্মুর কাছে ধোলাই খেতে হয় কোন কাজ কাম
করিনা।তারপর অসময়ে বাসার বাইরে গেলে জবাব
দিতে দিতে প্রান যায় যায়।তারপর যদি থাকে প্রান প্রিয়
পিন দেওয়া বোন মন চায় ফ্রিজের ভিতর কাটা
মুরগীর মত ঢুকে পড়তে।আর পারি না প্রেমের
কি জ্বালা ছুটির দিনগুলোতেও বাইরে ঘুর ঘুর করতে
হবে ঘুম পাচ্ছে আবার।
মহারানীর আদেশে বাসা থেকে তো বেরিয়েছি
কিন্তু ফেঁসে গেছি আর এক ফাঁদ।এটাকে ফাঁদ বলা
যায় না অবশ্য মানুষের পাশে তো মানুষই দাড়াবে।
আমাদের নিচ তলার আপু উনার স্বামী বাইরে
গেছেন গত সপ্তাহে ফিরতে লেট হবে।এদিকে
উনার গুনধর পুত্র রঙিন মার্বেল নিয়ে খেলতে
খেলতে গিলে ফেলছে।গিলে তো ফেলছে
আল্লাহর রহমতে কোন অসুবিধা হয় নি।কিন্তু
একমাত্র পোলা তো যতই ফাজিল হোক নিজেরই
আপু কান্নাকাটি শুরু করেছে যদি কিছু হয় কোন বিপদ
হয়।আপুর কান্নাকাটি দেখে যদিও পিচ্চিটা স্বাভাবিক ছিল
এখন কান্নাকাটি দেখে ও নিজেও কাঁদতে শুরু
করেছে।এদিকে কান্নাকাটি তে মা ছেলে
একেবারে তুমুল কান্ড।শহরের সব গলি চেনা
থাকলেও আপু আজ ভীতু একা ডাক্তারের কাছে ও
যেতে পারবেনা কারন সাহস দেওয়ার মত একটা
লোক চাই যেহেতু উনার জামাই দেশে নেই।যদিও
বেশি কিছু না তারপরেও মায়ের মন তো।আমাকে
ভাই বলে ডাকে ধরেছে আমাকে সাথে যেতে
হবে।কিন্তু বলে আর সুযোগ পাইনি আব্বুর
চোখের ইশারায় রিক্সায় উঠে পড়লাম।ভাবছি মৌ কে
বলে দেই আজ আসা হবেনা পকেটে হাত
ঢুকাতেই থ। এই যা মোবাইলটাও বাসায় ফেলে
আসছি।কপালে যে কি আল্লাহই জানে।অবশেষে
ডাক্তারের কাছে গিয়ে ট্রিটমেন্ট নিতে নিতে
বিকেল।হবেই বা না কেণ সিরিয়াল সবখানে সিরিয়াল
আমাদের মত কত রোগী বসে আছে।সিরিয়াল
টানতে টানতে কতজনের শ্বাসকষ্টও শুরু হয়।যাই
হোক বাসায় ফিরলাম চারটের পরে।ফ্রেশ হয়ে
মোবাইল হাতে নিতেই চোখ ছানাবড়া মৌ কলিং দুইশত
আটচল্লিশ বার আর দুবার দিলে আরেকটা হাফ
সেঞ্চুরি হত।যাই হোক মেসেজ ও দিয়েছে
পাগলীটা।
এভাবে না ঠকালেও পারতে শুভ্র।ম্যাসেজের কি
স্রি আমি আবার কোথায় ঠকালাম মানছি তুমি ওয়েট
করে কষ্ট পেয়েছ তাই বলে এত।কল দিলাম নাম্বার
বন্ধ।ধুর কিছু ভাল লাগেনা।শুধু শুধু মেয়েটা ভুল বুঝল।
কিছু যে বলব রাগে ফেনটা অফ করে
রেখেছে।এত রাগ কেন মেয়েটার।নাহ কিছুই
ভাল্লাগে না।
.
পরেরদিন সকালে অনেকবার ট্রাই করার পর রিং
হচ্ছে..
-হ্যালো মৌ তোর ফোন অফ কেন?
-কে আপনি?
-দেখ মৌ তোকে আমার অনেক কিছু বলার আছে।
-আমি আপনাকে চিনিনা আপনার সাথে কোন কথা
নেই।
-মৌ প্লিজ একবার শোন।
-স্যরি রং নাম্বার।
-মৌ মৌ
-টুট টুট টুট
ধ্যাত এই মেয়েটা একটা রাগের ডিব্বা।একটু তো
বলার সুযোগ দে তা নয় আমাকেই চিনেনা এখন।
বিকেলে ওর বাসার সামনে গিয়ে দেখি মুদি দোকান
থেকে কিছু কিনে বাসায় ফিরছে।যাক বাবা ফোন
করে তো মহারানীর দেখা পাওয়া যেতনা দেখা
পেয়েছি এটাই অনেক।আস্তে আস্তে গিয়ে ওর
সামনে দাড়ালাম।
-কি কিনলি দেখি আজকে তোর বাসায় খেতে যাব।
-পথ ছেড়ে দাড়ান।
-মৌ প্লিজ আমার কথাটা তো শোন।
-না কোন কথাই শুনব না।
-দেখ এত রাগ কিন্তু ভাল না।
-হু মুখ ঘুরিয়ে হাঁটা দিল।
-তো বলে যা বাসায় কি খাচ্ছিস আজকাল এত রাগ
হচ্ছে তোর।
-চুপ চাপ হাঁটছে।
-মৌ প্লিজ চুপ থাকিস না আমার খারাপ লাগে।
-নিজের মত অন্যদিকে মুখ করে হাঁটছে।
-কি হয়েছিল সেদিন শুনবি তো....
-ব্যাস আমি কিছু শুনতে চাইনা শুভ্র এনাফ ইজ এনাফ।
-না শুনতে হবে তোকে।
-আমি কিন্তু চিৎকার করব এবার।
-কর না কর প্রেমিক প্রেমিকার মাঝে কেউ
আসবেনা।
-হোয়াট ডু ইউ মিন বাই প্রেমিক প্রেমিকা শুভ্র হাউ
ফানি!
-কেন আমরা দুজন দুজনকে ভালবাসি তাই প্রেমিক
প্রেমিকা।
-ভালবাসব তোমাকে হা হা হা।
-কেন ভালবাসিস না?
-না বাসিনা যার কাছে আমার কোন মূল্য নেই যে
আমার কষ্ট বোঝেনা তার সাথে প্রেম তো
দূরের কথা কথা বলতেও ঘৃনা লাগে।
-সত্যিই ঘৃনা লাগে তোর?
-হ্যা ঘৃনা লাগে আর শোন এরপর আর আমাকে
বিরক্ত করতে আসবেনা।
-এতে খুশি তুই।
-হ্যা এখন পথ ছাড়।
-একটু বেশি রাগ করলিনা?
-চুপ চাপ চলে গেল।
মেয়েটার রাগ অনেক গভীর।হয়ত ওর জায়গায়
থাকলে আমিও এমন করতাম।কিন্তু আমাকে একটু
সুযোগ দিতে পারত মেয়েটা।এত অভিমানী কেন
হল। ও জানেনা ওকে ছাড়া আমার কষ্ট হয়।
.
তিনদিন চলে গেল..
যে যার মত আছি।ও আমাকে মনে করেনা ইচ্ছে
করলেও আমি কিছু করতে পারিনা।অনেক কষ্ট
পেয়েছি এ দিনগুলোতে।ওকে যদি দেখাতে
পারতাম।কিছুতেই মন বসেনা।এভাবে চলতে পারেনা
ওকে যেভাবেই হোক বলতে হবে আমাকে
চাইলে ফিরবে না হলে না।
একটা টেক্সট করলাম ওর ফোনে সেই জায়গাটায়
আসতে কাল আমি অপেক্ষা করব।মেসেজটা
সেন্ট হয়েছে ডেলিভারি রিপোর্ট সো
করেছে।জানিনা ও আসবে কিনা এছাড়া কোন উপায়
ছিল না।
পরেরদিন....
অনেকক্শন ওয়েট করেছি কখনও বসেছি
দাড়িয়েছি দু এক পা হেঁটেছি অস্থিরতা কাজ করছিল
মনে।অবশেষে মৌ এল।
-কেমন আছিস মৌ।
-ভাল।
-একটা সুযোগ দিতিস আমাকে এভাবে দূরে না
সরিয়ে।
-কিছু বলার থাকলে বল আমার কাজ আছে।
-সারাজীবন আমি কাজের অজুহাত দিয়ে গেলাম আজ
তুই দিচ্ছিস।
-মানুষের কাজ থাকতেই পারে।
-হ্যা অবশ্যই শোন আমি ভাবিনি তুই আসবি এসেছিস
যখন অল্প একটু সময় কয়েকটা কথা বলেই চলে
যাব।
-হুম।
-সেদিন আমি সত্যিই বাসা থেকে বেরিয়েছিলাম
তোর কাছে আসব বলে কিন্তু একটা আপুর
বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হয়।যদিও
মত ছিলনা তবু আব্বুর নির্দেশে যাই।কপালটা এতই
খারাপ ডাক্তারের কাছ থেকে বাসায় ফিরতে বিকেল
হয়ে গেল। ফোনটাও ভুলে বাসায় রেখে গেছি
তোকে যে বলব কোন উপায় ছিল না।এখন তুই
বল আমি কি ভুল করেছি।
-আমি কিছু জানিনা।
-সত্যিই কিছু জানিস না এখনো রেগে থাকবি।
-আমার কোন রাগ নেই।
-তাহলে আমার সাথে কথা বলিস না কেন?
-প্রয়োজন মনে করিনা তাই।
-এত সহজে সব ভুলে গেলি?
-হ্যা আর কিছু বলার আছে?
-নাহ।
-যাই তাহলে।
-মৌ শোন।
-বল।
-এই নে...(একটা বক্স এগিয়ে দিলাম)
-কি এটা।
-আছে কিছু একটা এখানে খুলিস না বাসায় গিয়ে খুলিস
প্লিজ।
-আচ্ছা আর কিছু।
-নাহ।
-আচ্ছা আসি।
-মৌ শোন।
-বল
-আর কোনদিন জ্বালাব না তোকে।
-আর কিছু।
-সত্যি সত্যি চলে যাব রে।
-ওকে।
-আমার সব কথা ফুরিয়ে গেছে এখন যেতে পারিস।
-আচ্ছা আসি তাহলে।
মেয়েটা এখনো রেগে থাকবে আমার উপর
এতটাই কি দোষী ছিলাম আমি।বক্সে কিছু চুড়ি
দিয়েছি।জানিনা পরবে কিনা তবুও দিলাম।
.
রাত বারটা....
মৌ ফোন দিয়েছে...
-আর কত কাঁদাবি আমাকে?
-ধুর পাগলী তুই কাঁদবি কেন তোর তো আজ
সুখের দিন আজ থেকে তুই মুক্ত।
-তোকে মেরে ফেলতে ইচ্ছে করছে।
-ফেল মেরে ফেল সব জ্বালা নিভে যাক।
-তুই বুঝিস না আমি তোকে ছাড়া বাঁচতে পারব না।একটু
অভিমানও করা যাবেনা তোর সাথে।
-কর কে মানা করেছে।
-বক্সের ভিতরে কাগজে কি লিখেছিস এটা।
-কি লিখেছি।
-তুই জানিস না কেন লিখলি এটা।
-ঠিকই তো লিখেছি।
-তোর মাথা ফাটাব।
-এতরাতে কেমনে।
-জানিনা তবুও ফাটাব।
-পাগলী হা হা হা।
-হাসবিনা শয়তান কাল ভোর পাঁচটায় যেন আমার বাসার
সামনে পাই তোকে।
-কিন্তু...
-না আসলে তোর ঠ্যাং ভেঙে ফেলব।
-আচ্ছা আসব কিন্তু কেন আসব বলবি তো।
-তোর হাত ধরে হাঁটব।
-এত সকালে কি রুচি তোর।
-চুপ আসতে বলেছি আসবি।
-আচ্ছা।
-আর কোনদিন যদি মরার কথা মুখে এনেছিস দেখিস
আমি সত্যি সত্যি মরে যাব।
-এই পাগলী থাম তো আর বলব না।এখন ঘুমা।
-হুম মনে থাকে যেন পাঁচটায়।
-আচ্ছা।
-লাভ ইয়ু।
-টু।
-টু মানে কি ভাল করে বল শয়তান।
-আই লাভ ইয়ু টু মৌ বৌ।
-হি হি হি পাগল একটা।
-হুম পাগলী।
.
বক্সে একটা কাগজে লিখে দিয়েছিলাম শুভ্রর আজ
থেকে মৃত্যু হল।জানতাম ও যে মেয়ে সহ্য
করতে পারবেনা।মহারানী বলে কিনা একটু অভিমান
করেছে এটা যদি একটু হয় বেশি যেদিন হবে
সেদিন কি হবে আল্লাহই জানে।ঘুমাই এখন কাল নতুন
রেকর্ড গড়তে হবে ভোর পাঁচটায় উঠে
প্রেমিকার হাত ধরে হাটতেছি এখনই তো স্বপ্ন
দেখা শুরু হয়ে গেল হা হা হা।।।।
.
.
লিখা:অন্তহীন শ্রাবন

বুধবার, ২২ জুন, ২০১৬

আশার ভেলা




একটি রুমের ভেতরে চারটি মোমবাতি জ্বলছিলো। মোমবাতিগুলো একে অপরের সাথে তাদের
নিজস্ব ভাষায় কথা বলা শুরু করলো।
..
--- প্রথম মোমবাতিটি বললো, ''আমি শান্তি। কেউ আমাকে জ্বালিয়ে রাখতে পারবেনা। আমি এখন নিভে যাবো।"
..
তারপর সেটি নিভে গেলো।
..
--- দ্বিতীয় মোমবাতিটি বললো, ''আমি বিশ্বাস। শান্তি যেহেতু নেই, তাই আমার আর জ্বলতে থাকার কোনো প্রয়োজন দেখছিনা। আমি এখন এখন নিভে যাবো।"
..
কথা শেষ করার পর দ্বিতীয় মোমবাতিটি নিভে গেলো।
..
--- তৃতীয় মোমবাতি এবার মুখ খুললো, "আমি ভালোবাসা। শান্তি এবং বিশ্বাস কেউ নেই, তাই আমারো বেশিক্ষণ জ্বলার মতো শক্তি নেই। মানুষেরা আমাকে গুরুত্ব না দিয়ে একপাশে
সরিয়ে রাখে। শুধু তাই না, ওরা প্রিয় মানুষ গুলোকে পর্যন্ত ভুলে যায়।"
..
কথা শেষ করে তৃতীয় মোমবাতিটিও নিভে গেলো। কিছুক্ষণ পর রুমের মধ্যে একটি বাচ্চা প্রবেশ করলো, তিনটা নিভে যাওয়া মোমবাতির পাশে টিমটিমে জ্বলতে থাকা চতুর্থ মোমবাতি দেখে বাচ্চাটি প্রশ্ন ছুড়ে দিলো।
..
--- তোমরা জ্বলছো না কেন? তোমাদের পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত জ্বলা উচিৎ ছিলো।
..
তারপর বাচ্চাটি কাঁদতে শুরু করলো। এবার চার নম্বর মোমবাতিটি মুখ খুলে।
..
--- ''ভয় পেয়ো না। আমি যতক্ষণ জ্বলছি, তুমি চাইলেই আমাকে দিয়ে আবারো বাকি মোমবাতি গুলোকে জ্বালাতে পারো। আমার নাম আশা।"
..
বাচ্চাটি আশা নামের মোমবাতিটি দিয়ে একে একে বাকি মোমবাতি গুলোকে আবারো জ্বালালো। সমস্ত রুমটা আবারো উজ্জ্বল আলোতে আলোকিত হয়ে উঠলো।
..
গল্পটি রূপক। হাজারও হতাশা, দুঃখ আর সমস্যার অন্ধকারে ডুবে গিয়ে আশা নামের আলোটিকে কখনোই নিভতে দেওয়া উচিৎ নয়। কারন আশা না থাকলে আমাদের জীবন থেকে শান্তি, বিশ্বাস এবং ভালবাসাও অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।
--
--
সংগৃহীত 

ভালবাসি তোমার সবকিছু



আমি ওনাকে প্রথম যে উপহার দেই তা "এক
প্যাকেট
বেনসন লাইট"!
উনি আমায় প্রথম যা দেন তা, হুমায়ুন আজাদ এর
সম্পাদনায় একটি "কবিতার বই"।
প্রথম উপহারটা দেওয়া হয়েছিল বাক্সে এঁটে। ও
এবড়ো থেবড়ো রিকসার ঝাঁকুনির মাঝেই একটা পর
একটা বাক্স খুলছিল। শেষ বাক্স,অর্থাৎ সিগেরেট
এর বাক্সটা দেখে সে চমকে উঠে আমার দিকে তাকালো।
আমি হালকা হেসে মাথা নিঁচু করেছিলাম।
আমি সিগেরেট খাইওনা,পছন্দও করিনা। অথচ
সিগেরেট তার অভ্যেস।উপহারের মাধ্যমে শুধু তাকে
একটা মেসেইজ দেবার ছিল… "আপনার
সত্ত্বা,স্বাধীনতা পছন্দ বা অভ্যেস আমি কেড়ে
নিবোনা। এবং একি সাথে আমারটাও আপনি নেবেন না
আশা করি।চলুন এভাবেই শুরু করি প্রেম?!"
সে করেছে।আমার নিঃশব্দ আকাঙ্খা বুঝেছে
নিঃশব্দেই…
। সাব্বির রাগী,সাব্বির রুড
,সাব্বির চুপচাপ,সাব্বির ডোন্ট কেয়ার, সাব্বির
এটা দেখতে পারেনা ওটা পছন্দ করেনা কিন্তু
দিনশেষে সে আমার সাথে প্রাণখোলা,আমার চিন্তার
সে একমাত্র সহায়ক,আমার বিপদের সে অন্যতম
প্রিয় বন্ধু,আমার এডভেঞ্চারের সে একমাত্র
সঙ্গী,আমার হাসির সে দর্শক,আমার আবৃতির সে
একমাত্র শ্রোতা,আমার গল্পের সে একমাত্র
পাঠক,আমার পার্সোনালিটির সে একমাত্র
ফ্যান,এবং আমি যখন ডিপ্রেশন এ ভুগি সে
একমাত্র প্রভাবক যে বলে "তুমি যা করেছো,ঠিকই
করছো। তোমার যেকোনো সিদ্ধান্ত আমি শ্রদ্ধা
করি।কারণ তুমি জ্ঞানী। তোমার চিন্তা
বিস্তর।"!
আমি হাসি। হাসতেই থাকি।
ওর আমার উপহার দেওয়া নেওয়া সাধারণের মাঝেও
অসাধারণ।আমাদের ধারণা আমাদের মেয়ে হবে। এর
মাঝেই দেয়া নেওয়া হয়ে গ্যাছে
এক জোড়া ছোট্ট রাজকন্যার পায়ের জুতো, ছোট্ট
মোজা,ছোট্ট ফ্রক,(আমাদের মেয়ের চুল বড় হবে)তাই,
চুলের ক্লিপ, খেলনা… কত্ত কিছু!
আরো আছে ম্যাচ-কাঠির ঘর,লিখার খাতা,রিচড
ব্যান্ড,কালো টিপ,কাঠের চুড়ি,কবি ব্যাগ,অসংখ্য
বই অসংখ্য স্বপ্ন।
ভেবে চিন্তে দেখে শুনে আমরা একে অপরকে সে সকল
জিনিস ই দিয়েছি "যা আমার পছন্দ,আমার স্বপ্ন
নয়," যা ওর স্বপ্ন ওর উচ্ছাস"! …
কবে যেন ওর আমার স্বপ্ন একি হয়ে গ্যাছে টের
পাইনি।
গত রাতে একপ্রকার ঘুমিয়েই পড়েছিলাম। ঘুম
ভাঙলো তার ফোন কলে। হ্যালো বলার সুযোগ দিলনা
অপরপক্ষ। হরবর করে বলে গেল কি যেন… এই কি
যেন টা শুনতে বুকে খুব শান্তি পেলাম। " পারভেজ দা
ফোন করেছিলেন। বলেছেন আমি খুব ভালো
লিখি,আমি খুব ভালো জানি।যুগান্তরের স্পোর্টস
ডেস্ক টা এখম আমাকেই ডাকছে।আমি চাকরি পেয়েছি
চূড়া…"
কত অদ্ভুদ অদ্ভুদ কষ্টের দিন কেটেছে। কতদিন
মেইনস্ট্রিটে হাঁটাহাঁটি।বাসে ঝুলে ঝুলে ডেটে
যাওয়া,ব্যাংক ভেঙ্গে বইম্যালা,খুচরা পয়সা জমিয়ে
দেওয়া "নাইন্টি নাইনের গিফট"..রিকশা একটু
আধটু রোদে ঘোরা, দোকানে দোকানে চায়ের কাপে দশ
এর ভেতর নাম্বার দেওয়া, মাঝ রাত্তিরে টি এস সির
টিভিতে দেখা বাংলাদেশের ম্যাচ। কালো এই জঞ্জালে
ভরা মিথ্যে কথার শহরে তোমার আমার লাল নীল
সংসার…
সত্যি বলছি! কানের মাঝে অনবরত বেজে চলছে
"চাকরিটা আমি পেয়ে গেছি চূড়া শুনছো…
সাংবাদিক সাহেব এখন সত্যি সত্যি সাংবাদিক।
ছোট মানুষ! হালকা কাঁধ! সে নাকি শার্ট টা ইন করে
অফিসে যাবে! হাহা… খুব খুশি হয়ে হরবর করে
বললাম… "কনগ্র্যাটস সাব্বির! আমি আপনার টাই
বেঁধে দেবার লোভ সামলাতে পারছিনা!" মুচকি হেসে
আমায় অবাক হয়ে সে জানিয়ে দিল… "তুমি অফিসে
যাবে, শাড়ির কুচি তো ঠিক করে দেবো আমি! প্লিজ
ভালো করে পড়ো। আমিও লোভ সামলাতে পারছিনা।"
#Collected_From:-#Kameliya_Sharmin_Chura